শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

জমে উঠেছে পূজার কেনাকাটা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জমে উঠেছে পূজার কেনাকাটা

আর এক দিন পরই শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। উৎসবে নতুন পোশাক কিনতে শপিং মল, বিপণিবিতান এবং ফ্যাশন হাউসগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। করোনা সংক্রমণের তীব্রতা কমে আসায় বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। এতে হাসি ফুটেছে বিক্রেতাদের মুখে। গতকাল রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে বাবা-মায়ের সঙ্গে কেনাকাটা করতে এসেছিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রাজ। সে পাঞ্জাবি ট্রায়াল দিচ্ছিল। এবার পূজায় কেনাকাটার তালিকা জানতে চাইলে বলে, ‘এবার একটা পাঞ্জাবি আর একটা শার্ট কিনব। সঙ্গে স্যান্ডেল আর ঘড়ি কিনে দেবে বলেছে বাবা। লাল কিংবা খয়েরি রঙের পাঞ্জাবি খুঁজছি।’ শপিং কমপ্লেক্সের দোতলায় স্প্যাসিফিক সেন্টারে শিশুদের পোশাকের সমাহার। লাল জামা, কাপড়ের জুতা, কপালে কালো টিপ পরে বাবার কোলে চড়ে কেনাকাটা করতে এসেছে তিন বছরের ছোট্ট অরিত্রি। অরিত্রির মা অহনা পাল বলেন, পরিবারের সবার জন্য পূজার কেনাকাটা করতে এসেছি। পরিবারের ছোট আর আদরের সদস্যকে দিয়েই কেনাকাটা শুরু করলাম। সুতি কাপড়ের ফতুয়া কিনলাম। গরমে শিশুর আরামের কথা চিন্তা করেই এটা নেওয়া। এ ছাড়া মেয়ের জন্য একটা গাউন কেনার চিন্তা করছি।

শাড়ির দোকানগুলোতে বেশ ভিড়। শপিং মলের সবচেয়ে বেশি ভিড় সাত তলায়। দেশীয় ফ্যাশন হাউসের পোশাক কিনতে ভিড় করছে মানুষ। দেশী দশ, সৃষ্টি, রঙ বাংলাদেশ, দেশাল, বাংলার মেলা, নগরদোলা, নিপুণ, অঞ্জনস’র দোকানে নারীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। শরতের উৎসবে এবার শাড়িতে নানা রঙের পসরা নিয়ে এসেছে ফ্যাশন হাউস অঞ্জন’স। অষ্টমীতে পড়ার জন্য চওড়া লাল পাড়ের শাড়ি খুঁজছিলেন সুজাতা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, অষ্টমীতে নতুন শাড়ি পরে দেবীর পায়ে অঞ্জলি দেব। তাই সাদা কিংবা ঘিয়া রঙের শাড়িতে চওড়া লাল পাড় খুঁজছিলাম। কয়েকটা দেখে একটা পছন্দ হয়েছে। তবে এবার সব পোশাকের দাম বেশ চড়া। ক্রেতাদের ভিড় থাকায় এই চড়া দামেই কিনতে হয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার বাতাস পূজার বাজারেও লেগেছে। পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করতে এসেছেন অরিন্দম ঘোষ। তিনি বলেন, এবার পূজায় পরিবারের সবার জন্য একরকমের পোশাক কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

আমার আর ছেলের জন্য পাঞ্জাবি, স্ত্রীর জন্য শাড়ি আর মেয়ের জন্য থ্রিপিস কিনতে এসেছি। এখানে একটা ফ্যামিলি সিরিজ বেশ পছন্দ হয়েছে। কাপড়ের ভাঁজে প্রতিমার মুখশ্রী ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তুলির আঁচড়ে। এখন সাইজ মিলিয়ে দিলে দাম পরিশোধ করে জুতার দোকানে পা বাড়াব। বসুন্ধরা শপিং মলে অঞ্জন’স-এর ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রেজাউল করিম হাসান বলেন, গত শুক্রবার থেকে পূজার কেনাকাটা জমে উঠেছে। গত দুই বছরের তুলনায় এবার ক্রেতার সমাগম ভালো, বিক্রি ভালো চলছে। এবার পোশাকে রঙের বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। পাঞ্জাবি, শাড়ি, টি-শার্টে প্রতিমার পোর্টেট করা হয়েছে। এই পোশাকগুলো ক্রেতারা বেশ পছন্দ করছেন। পরিবারের সবার জন্য একরকমের পোশাক ফ্যামিলি সিরিজের বিক্রিও ভালো চলছে।

নগরদোলার শপ ম্যানেজার নুসরাত জাহান স্বপ্না বলেন, শরতের আকাশ এবং পূজার আবহ অনুযায়ী এবার বাহারি রঙের শাড়ি রেখেছি আমরা। ক্রেতারাও পোশাকগুলো বেশ পছন্দ করছেন। ফ্যামিলি সিরিজের পোশাকে অফার ছেড়েছিলাম আমরা, দারুণ সাড়া মিলেছে। অফার শেষ হলেও অনেকে এখনো চাইছে। গত সপ্তাহ থেকে ক্রেতা সমাগম বেড়েছে মার্কেটে। সামর্থ্য, দূরত্ব এবং পোশাকের বৈচিত্র্য অনুযায়ী রাজধানীর মার্কেটগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। গতকাল বিকালে নিউমার্কেটের দোকানগুলো ক্রেতাদের ভিড়ে ছিল সরগরম। একই অবস্থা গাউছিয়া এবং এলিফ্যান্ট রোড এলাকার মার্কেটগুলোতেও। নিউমার্কেটের সুপার ফ্যাশন হাউসে শার্ট কিনতে এসেছেন মৃন্ময় দাস। তিনি বলেন, পূজায় এবার রংধনু রঙের পাঞ্জাবি কিনব। বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে এখানে পেয়েছি। কিন্তু দাম একটু বেশি চাইছে। এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং মলে ব্যাগ দেখছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুনন্দা সরকার। তিনি বলেন, পূজায় একটা থ্রিপিস এবং শাড়ি কিনেছি। শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং করে একটা ঝুলানো ব্যাগ খুঁজছি। করোনা সংক্রমণের তীব্রতা কমে আসায় দুই বছর পর এবার পূজায় শহরজুড়ে বেড়ানোর পরিকল্পনা আছে। বন্ধুরা মিলে এর মধ্যেই কোন কোন মণ্ডপে যাব তা ঠিক করে ফেলেছি।

সর্বশেষ খবর