শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কুশিয়ারা থেকে পানি উত্তোলনে ভারতীয় মন্ত্রিসভার সম্মতি

কলকাতা প্রতিনিধি

সীমান্ত নদী কুশিয়ারা থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি উত্তোলন করতে পারবে ভারত ও বাংলাদেশ। বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ অনুমোদনের ফলে ১ নভেম্বর থেকে ৩১ মে- এ শুষ্ক মৌসুমে ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশই কুশিয়ারা নদী থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি উত্তোলন করতে পারবে।

কেন্দ্রীয় সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়- ‘ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে হওয়া এ সমঝোতা স্মারকটি আসাম সরকারকে শুষ্ক মৌসুমে কুশিয়ারা নদীর সাধারণ প্রবাহ থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি উত্তোলনে সক্ষম করবে... তাদের পানির প্রয়োজনের জন্য।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়- ‘শুষ্ক মৌসুমে উভয় পক্ষের পানি উত্তোলনের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণের জন্য উভয় দেশের তরফেই একটি যৌথ মনিটরিং টিম গঠন করা হবে।’ ৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যে সাতটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে, তার একটি হলো কুশিয়ারা নদীর পানি উত্তোলন সম্পর্কিত। দিল্লিতে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দুই দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এ চুক্তির অধীনে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ নদী কুশিয়ারা থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি উত্তোলন করতে পারবে উভয় দেশ। ভারতের বরাক নদ সিলেটের জকিগঞ্জের অমলসীদ দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে সুরমা ও কুশিয়ারায় ভাগ হয়েছে। কুশিয়ারার উৎসমুখ থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে শরীফগঞ্জ বাজার। এ বাজারের কাছেই কুশিয়ারা নদী থেকে উৎপত্তি রহিমপুর খাল। প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রাকৃতিক খাল থেকে উৎপত্তি হয়েছে আরও অসংখ্য খালের। ওই এলাকার কৃষকদের সেচের প্রধান উৎস এ খালগুলো। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে সেই খাল একেবারেই শুকিয়ে যায়। আবার বর্ষাকালেও পানি থাকে না খালগুলোয়। এর কারণ রহিমপুর পয়েন্ট। এ পয়েন্টটি অনেকটা উঁচু হওয়ায় বর্ষার মৌসুম বাদে শীত বা শুষ্ক মৌসুমে আমন ধান চাষের সময় এমনকি বর্ষা মৌসুমেও পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে পানির স্তর যখন কমতে থাকে তখন কুশিয়ারা থেকে রহিমপুর খালে আর পানি ঢুকতে পারে না। ফলে পানির অভাবে শুষ্ক মৌসুমে পুরো অঞ্চলটিতে কোনো কৃষিকাজ করা সম্ভব হয় না। ওই অঞ্চলে মাটির নিচেও পানির স্তর অনেক নিচে। রহিমপুর খালটি যেহেতু ভারতের সঙ্গে সীমান্তের খুব কাছে সে কারণে যৌথ নদীটি থেকে পানি উত্তোলন বা খাল খননে এ সমঝোতা দরকার ছিল। সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পের আওতায় মূলত শুষ্ক মৌসুমে এ পানি উত্তোলন করে তা কৃষিজমিতে সেচের কাজে ব্যবহার করা হবে। এ বিষয়টি সুরাহা করতে ২০১৬ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। ২১ আগস্ট যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে কুশিয়ারি থেকে রহিমপুর খাল দিয়ে ১৫৩ কিউসেক পানি উত্তোলনের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। তারপর চুক্তির খসড়া তৈরি করা হয়। আর সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দুই দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর