রবিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

দেশি প্রযুক্তিতে সচল ডেমু চলবে আজ থেকে

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দেশি প্রযুক্তিতে সচল ডেমু চলবে আজ থেকে

কম দূরত্বে যাত্রী পরিবহনের জন্য আনা চীনা প্রযুক্তির ডেমু  ট্রেনগুলো দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে পড়ে থাকে। এ অবস্থায় দেশীয় প্রযুক্তিতে একটি ডেমু ট্রেন সচল হয়েছে। আর সচল হওয়া ডেমু ট্রেনটি আজ থেকে পার্বতীপুর-রংপুর রেল লাইনে নিয়মিত চলাচল করবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা (কেলোকা) প্রধান নির্বাহী মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি আরও জানান, রবিবার থেকে পার্বতীপুর-রংপুর রুটে একটি ডেমু ট্রেন চলাচল করবে। সময়সূচি অনুযায়ী, প্রতিদিন বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে যাবে এবং সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে রংপুরে পৌঁছাবে। আবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে রংপুর থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে পার্বতীপুরে পৌঁছাবে। চলাচলকারী ট্রেনটির কর্মদক্ষতা সন্তোষজনক হলে ভবিষ্যতে পর্যায়ক্রমে পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুর, পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া ও কাউনিয়া থেকে কুড়িগ্রাম লাইনেও চলাচল করবে। এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টায় পার্বতীপুর রেলওয়ে জংশন থেকে কিছু সংখ্যক যাত্রী নিয়ে পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে ট্রায়াল দেয় এই ডেমু ট্রেনটি। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ সেট ডেমু ট্রেন আমদানি করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল ওই ট্রেনের মাধ্যমে কাছাকাছি দূরত্বে ব্যাপক যাত্রী পরিবহন করা। চীনের তানসন ইন্টারন্যাশনাল ও ডানিয়াল টেকনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ওই ডেমু ট্রেনের নির্মাতা। কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ওই ট্রেনগুলো এক ধরনের বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে পরিচালিত। যা প্রযুক্তি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে হস্তান্তর করেনি। এর মডিউল বিকল হলে নতুন মডিউলের সঙ্গে সফটওয়্যার সেটআপ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এর জন্য ধরনা দিতে হয় চীনা প্রকৌশলীদের কাছে যা ছিল ব্যয়বহুল। একটি ডেমুতে ৪০টি মডিউল রয়েছে। যার একটির দাম প্রায় ৭ লাখ টাকা। চীনা প্রকৌশলীরা প্রযুক্তি হস্তান্তর না করায় একটার পর একটা ট্রেন বিকল হতে থাকে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী ও আণবিক শক্তি কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামানের সহযোগিতা চাওয়া হয়। আসাদুজ্জামান ডেমু নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। গবেষণাগার হিসেবে তিনি বেছে নেন  সৈয়দপুর রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাবের একটি কক্ষ। ৭২ দিনের প্রচেষ্টায় তিনি উদ্ভাবন করেন বাস-ট্রাকের মতোই ডেমু চালানোর প্রযুক্তি। ব্যয়বহুল মডিউল সরিয়ে দেন তিনি। সে ক্ষেত্রে বসানো হয় মাত্র দুটি কট্রোলার। এতে চালু হয়ে যায় অচল এক সেট ডেমু ট্রেন। আর নতুন উদ্ভাবিত এ প্রযুক্তিতে মেরামত খরচ অনেক কম পড়বে।

সর্বশেষ খবর