সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
নারীর প্রতি সহিংসতা

হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে হত্যার চেষ্টা!

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যৌতুকের টাকা না পেয়ে কাজল রেখা নামে বাকপ্রতিবন্ধীকে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সকালে  উপজেলার পিতলগঞ্জ এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নৌকার মাঝিরা কাজল রেখাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক।

অন্যদিকে যৌতুকের দাবিতে নাসিমা নামের আরেক গৃহবধূকে শ্বাশুড়ি ও ননদ মিলে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার  রাতে উপজেলার আতলাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভিকটিমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাত বছর আগে রূপগঞ্জ উপজেলার কেন্দুয়া গ্রামের আম্বর আলীর মেয়ে বাকপ্রতিবন্ধী কাজল রেখার সঙ্গে পিতলগঞ্জ এলাকার মিব্বর আলীর ছেলে জুলহাস মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়েতে যৌতুক হিসেবে ১ লাখ টাকা, ১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, সেলাই মেশিনসহ আসবাবপত্র দেওয়া হয়।  বিয়ের             পর তাদের সংসারে তানজিলা নামের                    মেয়ে সন্তান হয়।

গত কয়েক মাস ধরেই যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল স্বামী জুলহাস মিয়াসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। টাকা দিতে না পারায় স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন কাজল রেখাকে একাধিকবার শারীরিক নির্যাতন করে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিস হয়েছে। নির্যাতনের কথা শুনে শনিবার বিকালে স্বামীর বাড়ি থেকে মেয়ে কাজল রেখাকে আনতে যান তার মা আকলিমা বেগম। মায়ের কাছে কাজল রেখাকে দেয়নি স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরদিন গতকাল ভোর ৬টার দিকে পিতলগঞ্জ এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীতে বাকপ্রতিবন্ধী কাজল রেখাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ভাসতে দেখে নৌকার মাঝি মুনসুর মিয়া অর্ধমৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কিছুটা সুস্থ হয়।

অন্য  ঘটনায় গৃহবধূ নাসিমা আক্তার অভিযোগ করে জানান, তিনি উপজেলার চারিতালুক এলাকার সহিদুল্লাহ মাস্টারের মেয়ে। পার্শ্ববর্তী আতলাপুরের শরীফ উদ্দিনের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর সিনহা আক্তার (১৪) নামের এক মেয়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই শাশুড়ি ও ননদসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানাভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। তাদের নির্যাতনের কারণে একমাত্র মেয়ে সিনহা আক্তারকে বাল্য বিয়ে দেন তিনি। শনিবার রাতে শ্বাশুড়ি ফুল মেহের ও ননদ রোজিনা আক্তার মিলে নাসিমা আক্তারকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে তার আর্তচিৎকারে আশপাশের মানুষ এগিয়ে এসে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, উভয় ঘটনার ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর