সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ধুমধামে ওয়ানগালা

শেরপুর প্রতিনিধি

ধুমধামে ওয়ানগালা

শেরপুরের ঝিনাইগাতী গারো পল্লীতে ধুমধামের সঙ্গে পালন করা হয়েছে খ্রিস্টরাজার মহাপর্ব ও ওয়ানগালা উৎসব। গতকাল দিনব্যাপী মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর গির্জা চত্বরে এ উৎসব উদযাপন করা হয়।         

গারোদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হলো এই ওয়ানগালা। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেবদেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী, আর ‘গালা’ অর্থ উৎসর্গ করা। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে দানের সামগ্রী নতুন ফসলকে উৎসর্গ করতে দেবদেবীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও মনোবাসনার নানা বিষয় নিবেদন করা হয়। সাধারণত বর্ষার শেষে ও শীতের আগে, নতুন ফসল তোলার পর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ উৎসবের আগে সম্প্রদায়ের ওপর নতুন খাদ্যশস্য ভোজন নিষেধ থাকে। তাই অনেকেই একে ‘নবান্ন’ বা ‘ধন্যবাদের উৎসব’ও বলে থাকেন। এ ছাড়া এটি ‘১০০ ঢোলের উৎসব’ নামেও পরিচিত। এদিন সবাই রং-বেরঙের পোশাক পরে ও পাখির পালক মাথায় দিয়ে লম্বা ডিম্বাকৃতির ঢোলের তালে তালে নাচেন। পুরুষ ও নারীরা দুটি আলাদা সারিতে নাচের তালে তালে পরস্পরের প্রতি এগিয়ে যান। সঙ্গে থাকে মহিষের শিঙেতে বাজানো এক ধরনের আদিম বাঁশির সুর। উৎসব ঘিরে ধর্মপল্লীর পাশে গারোদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও শিশুদের নানা রকমের খেলনা নিয়ে বসে মেলা। বাড়ি বাড়ি তৈরি করা হয় পিঠা-পায়েসসহ নানান খাবার।  গতকাল সকাল ৯টায় মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর গির্জা চত্বরে থক্কা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ওয়ানগালা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর সহকারী পালপুরোহিত ও খামাল ফাদার রব্রাট দিলীপ গোমেজ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ও খামাল ফাদার বিপুল ডেভিট দাস। বক্তব্য দেন মরিয়মনগর প্যারিস কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওনারসন চাম্বুগং, আদিবাসী নেতা আলপন্স চিরান প্রমুখ। মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ও খামাল ফাদার বিপুল ডেভিড দাস জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর উদ্যোগে ওয়ানগালা উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। সুপ্রাচীনকাল থেকে গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্ম ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরাই এর মূল লক্ষ্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর