ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাতের আঁধারে কাঁচপুর সেতুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনী ফলক পুড়িয়ে ফেলেছে, ভেঙে ফেলেছে, এরা কারা? এরা আগুন সন্ত্রাস। আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে, প্রস্তুত হয়ে যান। রাজনীতি রাজনৈতিকভাবে আমরা মোকাবিলা করব। যদি খেলার নিয়ম ভঙ্গ করেন, তাহলে খবর আছে।
রাজধানীতে আবার জনস্রোত নামিয়ে শোডাউন করল ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। গতকাল বিকালে উত্তরা ৫ ও ৭ নম্বর সেক্টরের মাঝে থাকা লেকের পাড়ে সড়কের ওপর দুটি ট্রাক পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে মঞ্চ করা হয়। মঞ্চের সামনে পেছনে দুই পাশেই যতদূর চোখ যায় ততদূর পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। বেলা ৩টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুরের পর থেকেই উত্তরার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে থানা ও ইউনিট কমিটির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হতে থাকেন। নানা রঙের টুপি, টি-শার্ট পরে বাদ্য-বাজনার তালে তালে হাততালি দিয়ে মিছিল-স্লোগান দিতে দিতে তাঁরা সমাবেশে যোগ দেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচির পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন- মির্জা ফখরুল, বড় বড় কথা বলছেন, মুচলেকা দিয়ে তারেক রহমান লন্ডনে গেছেন। বিএনপি স্বাধীনতার শত্রু। বিজয়ের মাসে প্রস্তুত হয়ে যান। বিএনপি গণতন্ত্র গিলে খেয়েছে। আইনের শাসন গিলে খেয়েছে। আবার ক্ষমতায় এলে বিএনপি বাংলাদেশ গিলে খাবে। খেলা হবে। খেলা মানে পাল্টাপাল্টি না। খেলা মানে মারামারি নয়। আগুন নিয়ে আসলে, আগুন নিয়ে খেলতে চাইলে খেলা হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক জোনভিত্তিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে উত্তরায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। ‘বিএনপি-জামায়াত ও উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সন্ত্রাস ও ভয়াবহ নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে’ এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, খেলা হবে ভোট চুরি, দুর্নীতি, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। ভুয়া ভোটার তালিকা প্রণয়নকারীদের বিরুদ্ধে। খেলা হবে বিএনপির বিরুদ্ধে। খেলা হবে নির্বাচনের, খেলা হবে আগামী ডিসেম্বরে। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি মিথ্যাচার করে, ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। কিছু কিছু মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী বিএনপির সমাবেশ দেখে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির কিছু লোক দেখে এত উচ্ছ্বসিত হওয়ার কারণ নেই। আজকে উত্তরার সমাবেশ দেখে যান। বাংলাদেশের প্রতিটা অঞ্চলে, উপজেলায় আওয়ামী লীগ এ ধরনের সমাবেশ করতে পারে। তিনি আরও বলেন, আজকে গোটা জাতিকে আমরা জানাতে চাই আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। ষড়যন্ত্র করে, ধমক দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি জিয়াউর রহমানের ছেলে তারেক রহমান লন্ডনে বসে প্রতিদিন শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে এই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা কাজ করে যাচ্ছে। তারা বলছে, ১০ ডিসেম্বরের পরে নাকি খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে! সেটা মিথ্যা প্রমাণ করতে, তাদের জানান দিতে ঢাকা-১৮ আসনের আওয়ামী লীগের লোকজন একত্রিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সেই ষড়যন্ত্রকারীরা প্রকাশ্যে রাস্তায় নেমেছে। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকায় প্রতিটি আসনে যদি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জেগে ওঠে তারা ঢাকায় প্রেস ক্লাবের সামনেও দাঁড়ানো তো দূরের কথা, পালানোর পথ পাবে না।
