সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

সচিবালয়ে প্রবেশেও ফি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের প্রবেশে ফি আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার। সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর-সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে প্রবেশ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে গত মাসে এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে অর্থ বিভাগে। এটি কার্যকর হলে জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং পৌরসভার মেয়রদেরও নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে হবে।

জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী, এক বছরের জন্য ফি নির্ধারণ করা হবে। ফির বিনিময়ে এক বছরের জন্য একটি প্রবেশ কার্ড দেওয়া হবে। বেসরকারি ব্যক্তিদের প্রবেশ ফি বছরে ৫ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগ। এ ছাড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর-সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয়ে প্রবেশে বছরে ৩ হাজার টাকা এবং জেলা-উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের প্রবেশ ফি বছরে হবে ২ হাজার ৫০০ টাকা। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কারও কার্ড হারিয়ে গেলে, নষ্ট হলে বা অন্য কোনো কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লে আবার তা নিতে ২ হাজার টাকা ফি দিতে হবে। বেসরকারি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ ফি ৫ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগ। এ ছাড়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, সচিবালয়ে বেসরকারি গাড়ি প্রবেশের ক্ষেত্রে বছরে সর্বোচ্চ ফি হবে ১০ হাজার টাকা। সচিবালয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনাগত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপনের ব্যয় তুলে আনার পাশাপাশি পরিচালনা-রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে চিঠিতে জানিয়েছে জননিরাপত্তা বিভাগ। এ বিষয়ে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, সচিবালয়ে মানুষের সমাগম এবং গাড়ির জট কমাতে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রবেশে ফি থাকলে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ সচিবালয়ে প্রবেশ করবে না। এতে মানুষের সমাগম কমানো যাবে এবং গাড়ির জটও অনেক কমে আসবে।

পরে গতকাল বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘সচিবালয়ে প্রবেশপত্রটি আরও স্মার্ট ও যুগোপযোগী এবং আরও নিরাপত্তা-সংবলিত বিষয়গুলো যেন থাকে, সে জন্য সাজেশন করে আসছিল। এ বিষয়গুলো করতে আমাদের কিছু অর্থের প্রয়োজন হয়। যেমন এখানে ছবি থাকবে, এর সঙ্গে আইরিশ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়া থাকবে। এসব কাজ যখন করব তখন আমাদের টাকার প্রয়োজন হবে। যারা নেবেন তারাই এ অর্থ দেবেন আমরা এ রকমই মনে করছি। সে জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে এটা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’ জননিরাপত্তা বিভাগের তথ্যানুযায়ী, সচিবালয়ে মাত্র ১৭ দশমিক ৫৩ একর জমিতে ১১টি ছোট-বড় ভবন ও ছয়টি ক্যান্টিন রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন সভায় অংশ নেওয়া সদস্য ও দর্শনার্থীসহ প্রায় ২৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন সচিবালয়ে আসা-যাওয়া করেন। এ ছাড়া প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার গাড়ি প্রবেশ করে এবং বের হয়। এ কারণে সচিবালয়ে প্রায়ই গাড়ির জট লেগে থাকে। গাড়ি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হিমশিম খেতেও দেখা যায়। এ ছাড়া সচিবালয়ে পার্কিং না করতে পেরে অনেকে সচিবালয়ের সামনে ভিআইপি সড়কে গাড়ি রাখেন। ব্যস্ত এ সড়কে পার্কিং করার কারণে প্রায়ই লেগে যায় যানজট।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর