বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
উদ্বোধন হচ্ছে দুই বড় প্রকল্প

ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চালু হবে মেট্রোরেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চালু হবে মেট্রোরেল

বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে দেশের প্রথম মেট্রোরেল। প্রাথমিকভাবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত লাইনে মেট্রোরেল চলাচল করবে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে মেট্রোরেলের (এমআরটি লাইন-১) ডিপো এলাকার ভূমি উন্নয়নবিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক। এম এন সিদ্দিক বলেন, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারে নয়টি স্টেশন পড়বে। আমরা ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই অংশে মেট্রোরেল চালুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আমাদের ওই সময় বিবেচনায় রেখে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বলেছে। ১৬ ডিসেম্বর কেন চালু করা যাবে না এমন প্রশ্নে এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ডিসেম্বর মাসে অনেক কর্মসূচি থাকে। এ জন্য এটা ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে করা হবে। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন- ডিসেম্বরে বিজয়ের মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমআরটি লাইন-৬ উদ্বোধন করবেন।

মেট্রোরেলের (এমআরটি লাইন-৬) প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ৫ টাকা এবং সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ভাড়া হবে ১০০ টাকা। যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাড়া মওকুফ থাকবে। কোম্পানি সূত্র জানিয়েছে, সাপ্তাহিক, মাসিক, পারিবারিক কার্ড আগে থেকে কিনতে হবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা মেশিনেও কার্ড রিচার্জ করা যাবে। প্ল্যাটফরমে প্রবেশের সময় যাত্রীরা কার্ড পাঞ্চ করলেই দরজা খুলবে। নেমে যাওয়ার সময় আবার কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, তা না হলে যাত্রী বের হতে পারবে না।

ডিএমটিসিএল জানায়, সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা ২০৩০ অনুসরণে প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সার্বিক গড় অগ্রগতি ৮৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক (রেলকোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ৮৩ দশমিক ৮১ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুসরণে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার বর্ধিত করার জন্য নকশা পর্যন্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও জানান, আগামী বছর জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ বা ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এমআরটি লাইন-১ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরে পাতাল রেলপথের কাজ শুরু হবে। ১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে এটি সম্পন্ন হবে। কোথাও ৩০ মিটার, কোথাও ৭০ মিটার নিচ দিয়ে পাতাল রেলপথ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর যাবে। নিচ দিয়ে টিভিএম মেশিনে মাটি কেটে এগিয়ে যাওয়ার সময় ওপর থেকে বোঝাই যাবে না। তবে এই পথে ১২টি স্টেশন থাকবে, যেগুলো উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কাজ করতে হবে। এ ১২টি স্টেশনের কাজ শেষ করে নিচে চলে যেতে সর্বোচ্চ ছয় মাস লাগবে। এ ছয় মাস সময় রাস্তার অর্ধেকটা অংশ পুরোপুরি চালু থাকবে। বাকি অংশে কাজ চলবে। যেখানে স্টেশন আছে সেখানে সর্বোচ্চ ছয় মাস ট্রাফিক ড্রাইভারশন করতে হতে পারে। তিনি বলেন, মাটির নিচ দিয়ে কাজ করতে কোনো ইউটিলিটি লাইন সরানোর দরকার পড়বে না। আমরা অন্তত ৩০ মিটার নিচ দিয়ে কাজ করব। বাংলাদেশের কোনো ইউটিলিটি লাইন এত নিচে নেই। শুধু স্টেশন এলাকায় এটি প্রয়োজন পড়বে।

এদিকে, মেট্রোরেলের (এমআরটি লাইন-১) ডিপো এলাকার ভূমি উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাপানের টোকিও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ও দেশীয় ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে ডিএমটিসিএল। কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ-১-এর আওতায় নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ মৌজায় ৮৮.৭১ একর এলাকার ভূমি উন্নয়ন করা হবে। চুক্তির মূল্য ধরা হয়েছে ৬০৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

সর্বশেষ খবর