সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আচরণবিধি লঙ্ঘন, প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

আচরণবিধি লঙ্ঘন, প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২৭ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পরে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর কথা থাকলেও অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী তা মানছেন না। তারা একদিকে যেমন প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছড়াচ্ছেন, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটাচ্ছেন। নির্বাচন অফিস বলছে, আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রসিক নির্বাচনে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছড়িয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উন্নয়নের বন্যার প্রতিশ্রুতিতে ভাসছে এখন নগরী। কেউ কেউ একধাপ এগিয়ে নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনে চাকরি দেওয়ার নামে ভোট চাইছেন। তবে অনেক প্রার্থীর কাছ থেকে এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধের প্রতিশ্রুতি লক্ষ্য করা যায়নি। এ নির্বাচনকে ঘিরে তফসিল ঘোষণার আগেই সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা সাধারণ ভোটারদের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন আশার বাণী শুনিয়েছিলেন। আর মার্কা পাওয়ার আগেই সেই আশার বাণীর পরিধি বাড়িয়ে প্রচারণায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। কাউন্সিলরের উপদেষ্টারা দ্বারে দ্বারে ভোট চেয়ে উন্নয়ন করার ফিরিস্তি তুলে ধরছেন। প্রার্থী ও তাদের কর্মীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে উন্নয়নমূলক বক্তব্য তুলে ধরে ভোট চাইছে। সাধারণত রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন, ড্রেন নির্মাণ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, ভিজিএফ, ভিজিডি বরাদ্দ বেশি নেওয়া, বৈদ্যুতিক সড়ক বাতির সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া, সব বাড়িতে সাপ্লাই পানি পৌঁছে দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। এসব কাজ প্রতীক পাওয়ার পরে করার কথা থাকলেও তা না মেনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে অনেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ভোটাদের মতে, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিম্নআয়ের মানুষকে প্রভাবিত করা হচ্ছে। কেউ কেউ মোটরসাইকেলে শোডাউন দিচ্ছেন। প্রতীক বরাদ্দের আগে মিছিল-মিটিং, শোডাউনের ওপর দেওয়া নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা মানছেন না অনেকেই। বিশেষ করে নগরীর বর্ধিত এলাকাগুলোতে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীদের সভা-সমাবেশ ও শোডাউনে মুখর থাকছে   এলাকাগুলো। পাড়ায় পাড়ায় গড়ে উঠছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্প। ২০৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রংপুর সিটিতে পুরনো পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন ১৮টি ওয়ার্ড। সব মিলিয়ে ৩৩টি ওয়ার্ডে সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণা ক্যাম্প রয়েছে পাঁচ শতাধিক। এ ব্যাপারে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নাসির চৌধুরী বলেন, ৯ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের আগে এমন নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ নেই। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে রংপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে ১০ প্রার্থীসহ ২৪১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ১১টি সংরক্ষিত আসনের বিপরীতে ৬২ নারী কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ৩৩টি সাধারণ আসনের বিপরীতে ১৬৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর