সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বগুড়ায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা ইন্টার্ন চিকিৎসককে

সড়ক অবরোধ বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় ছুরিকাঘাতে আহত শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের ২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী (ইন্টার্ন চিকিৎসক) মো. মেহেরাজ হোসেন ফাহিম ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন শজিমেকের অধ্যক্ষ ডা. রেজাউল আলম জুয়েল। নিহত মেহেরাজ হোসেন ফাহিম শজিমেকের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং তিনি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের বাসিন্দা। 

এদিকে, শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ছয় দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকাল থেকে শজিমেক হাসপাতালের ২ নম্বর গেটের বগুড়া-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়ক  অবরোধ করে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। এর আগে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। গত বুধবার সন্ধ্যায় ইন্টার্ন চিকিৎসক ফাহিম বন্ধুদের সঙ্গে শজিমেক হাসপাতালের ২ নম্বর গেটে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় তারা ফরিদ ব্যাপারী ও শাকিল হোসেনের দোকানে ঝালমুড়ি খেতে যান। সেখানে বাবা-ছেলে মিলে ঝালমুড়ি বিক্রি করছিলেন। ঝালমুড়ি খাওয়া নিয়ে বাবা-ছেলের সঙ্গে বাগবিত ায় জড়িয়ে পড়েন ফাহিম। একপর্যায়ে শাকিল তার হাতে থাকা পিঁয়াজ কাটার চাকু দিয়ে ফাহিমের পেটে আঘাত করে পালিয়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে ফাহিমকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

ছাত্রলীগ শজিমেক শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মোফাজ্জল হোসেন রনি জানান, ঘটনার তৃতীয় দিন ফাহিমকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার এভারকেয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়। রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ ফরিদ ব্যাপারী ও ছেলে শাকিল ব্যাপারীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত দুজনকে আসামি করে পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে ফাহিমের বাবা নুর মোহাম্মদ থানায় মামলা করেন। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে- হাসপাতালের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন সব অনিবন্ধিত দোকান উৎখাত ও দোকানিদের ট্রেড লাইসেন্স চেক করাসহ পুলিশ ভেরিভিকেশন সম্পন্ন করার পর এখানে ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া, ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন নতুন রাস্তার মোড়, লেডিস হোস্টেলের সামনে, ফিরিঙ্গির মোড়, ভার্সেটাইল মোড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হবে, ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ও ক্যাম্পাসের কলেজ এরিয়ার অ্যান্ট্রি পয়েন্টগুলোতে আনসার মোতায়েন, দুই নম্বর গেট সংলগ্ন নতুন রাস্তার মোড়ে সার্বক্ষণিক পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা, ক্যাম্পাসের প্রত্যেক অন্ধকার পয়েন্ট আলোকিত করা, দ্রুততম সময়ে হত্যাকারী শাকিলের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা। এ সময় শিক্ষার্থীরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সরাফত হোসেন জানান, ইতোমধ্যে সব আসামি গ্রেফতার হয়েছে। তারা কারাগারে আছে। আইনিভাবে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের সব দাবি কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে বাস্তবায়নে পুলিশ কাজ করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর