সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মুক্তিপণ দাবিতে সুন্দরবনে ১০ জেলে অপহৃত

বাগেরহাট প্রতিনিধি

চার বছর দস্যুমুক্ত থাকার পর সুন্দরবনে আবারও শুরু হয়েছে বনদস্যুদের তৎপরতা। ১৫ ডিসেম্বর রাতে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বেড়ীর খাল ও অরমাল খাল থেকে বনদস্যুরা জেলেদের কাছ থেকে প্রায় ৭ মণ কাঁকড়া, ২০টি মোবাইল ফোন ও দুটি জেলে নৌকা নিয়ে গেছে। পরে মুক্তিপণের দাবিতে ১০ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। শনিবার রাতে অন্য জেলেরা বাড়ি ফিরে এলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়।

উল্লেখ্য, এলিট ফোর্স র‌্যাবের তৎপরতায় সুন্দরবনে একের পর এক বনদস্যু বাহিনীর সদস্যরা আগ্নেয়াস্ত্র-গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণে বাধ্য হবওয়ার পর ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। সুন্দরবন বিভাগও এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বনদস্যুদের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফিরে আসা জেলেরা জানান, পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই, জিউধারা ও ধানসাগর স্টেশন থেকে পারমিট নিয়ে ১০টি নৌকায় তারা ১৫ ডিসেম্বর রাতে বেড়ীর খাল ও অরমাল খালে কাঁকড়া শিকার করছিলেন। এ সময় নয়জনের বনদস্যু বাহিনী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে তাদের         কাছে থাকা ২০টি মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ও প্রায় ৭ মণ কাঁকড়াসহ দুটি নৌকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণের দাবিতে প্রতিটি নৌকা থেকে একজন করে ১০ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বনদস্যুরা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা নিয়ে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ না দিলে অপহৃত জেলেদের হত্যা করা হবে বলেও বনদস্যুরা হুমকি দেয়। অপহৃত জেলেদের মধ্য থেকে তিনজনের নাম জানা গেছে। তারা হচ্ছেন মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা গ্রামের আসাদুল হাওলাদার (৩৫), ডৌয়াতলা গ্রামের হানু (৪৫) ও বাগেরহাট সদরের ডেমা এলাকার সোহেল (৩৫)। এ ঘটনায় অপহৃত জেলেদের পরিবারের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার পর তাদের কোনো তৎপরতা ছিল না। ১৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিপণের দাবিতে সুন্দরবন থেকে ১০ জেলেকে অপহরণ ও ডাকাতির ঘটনা জেলেদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। বিষয়টি এর মধ্যেই র‌্যাব, কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশকে জানানো হয়েছে। মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের গোয়েন্দা কর্মকর্তা লে. কমান্ডার মামুনুর রহমান জানান, সুন্দরবনে নতুন করে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ ও বনদস্যুদের তৎপরতার বিষয়ে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুন্দরবনে কোনো বনদস্যু বাহিনীর তৎপরতা চালাতে দেবে না কোস্টগার্ড।

সর্বশেষ খবর