বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, ‘সুশাসনের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেও আমরা গ্রিডে দিতে পারছি না। মানুষের কাছে সুলভ মূল্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পারছি না। অপরদিকে ক্রমান্বয়ে বিরাট অঙ্কের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।’ গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে ‘খসড়া সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) : পরিচ্ছন্ন জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে কি?’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘সাধারণ মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যেও বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বাড়ানো হচ্ছে। অন্যান্য বড় লক্ষ্যমাত্রার মতোই ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি করা একটা অত্যন্ত উচ্চাকাক্সক্ষী টার্গেট। লক্ষ্যমাত্রাটা একটা স্লোগানের মতো। কপ-২৬-এর আগে বিভিন্ন দেশ ঘোষণা করেছিল নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রার কথা। সেটার তালেই কি আমরা বলছি, নাকি বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বলছি- সেটা ভাবনার বিষয়। আমাদের এখন পর্যন্ত যে অর্জন, ২০৪০ সালে সেই লক্ষ্যমাত্রায় আমরা যেতে পারব কি? তবে একটি কথা আছে, এখানে প্রযুক্তি ও অর্থায়নের প্রয়োজন। সেটা থাকলে আমরা ত্বরান্বিত করতে পারব। আমরা জলবায়ু পরিবর্তনকে মাথায় রেখে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাচ্ছি। সেখানে যে ধরনের প্রযুক্তির কথা বলা হচ্ছে, অনেক দেশ এগুলো বাদ দিয়ে যাচ্ছে। কার্বন ক্যাপচার অ্যান্ড স্টোরেজ, অনেকে এটা এখন আর ব্যবহার করছে না। এটা বর্জন করছে। এটা ব্যবহারে প্রচুর অর্থের ও জায়গার প্রয়োজন পড়ে। সেখানে যে বিনিয়োগ হয় সেটা কস্ট ইফেকটিভ হয় না। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এমন একটা খাত, এখানে অনেকের স্বার্থ রয়েছে। এ স্বার্থ দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরেও। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কৌশলগত উপাদান, বাইরের স্বার্থকে পেছনে ফেলে দেশের স্বার্থটা কী হবে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত।’
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় জ্বালানি খাতে আমরা পিছিয়ে আছি। আইইপিএমপিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়টি উপেক্ষিত হয়নি, তবে অবহেলিত হয়েছে। প্রযুক্তিগত পরিবর্তন যেভাবে চিন্তা করা দরকার সেটি পর্যাপ্ত হয়নি।’
