সোমবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদেশ থেকে ফিরে খামারে সাফল্য

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বিদেশ থেকে ফিরে খামারে সাফল্য

সংসারে সচ্ছলতা ও স্বাবলম্বীর আশায় বিদেশে গিয়েছিলেন। সুবিধা করতে না পারায় সেখান থেকে ফিরে এসে নিজ এলাকায় মুরগি পালন করে বাজিমাত করেছেন মনিরুজ্জামান ওরফে রিফাত। স্বল্প পুঁজি আর নিজের শ্রম ও নিষ্ঠাকে কাজে লাগিয়ে আজ বড় খামার গড়ে তুলে সবার অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন তিনি। মাত্র ২ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে শুরু করে এখন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা তার আয় হয়। ১৬ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে তার খামারে। পরোক্ষভাবে রয়েছে আরও কয়েকজন। এখন তার দুর্দিন কেটে সুদিন ফিরেছে। দৃঢ মনোবল আর শ্রম ও নিষ্ঠায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল গ্রামের মনিরুজ্জামান ওরফে রিফাত আজ সফল উদ্যোক্তা। তাকে অনুসরণ করে স্থানীয় অনেক বেকার যুবক বেকারত্ব দূরীকরণসহ আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য মুরগি পালনকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। খামারের কর্মচারী পিন্টু ও সুজন ইসলাম বলেন, ‘প্রবাস পোলট্রি অ্যান্ড চিকস’ খামারে মুরগি দেখাশোনার পাশাপাশি আমি মুরগির খাবার দেওয়া ও কখন ভিটামিন-ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে সে সব কাজ করি। মুরগির ডিম ও বাচ্চার হিসাব দেখাশোনা করি। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন খামারে একদিনের মুরগির বাচ্চা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকি।

 রিফাত জানান, আমি মাদরাসায় পড়াশোনা করেছি। এরপর উন্নত জীবনযাপনের জন্য ২০০৫ সালে আবুধাবি পাড়ি জমাই। কিন্তু দীর্ঘদিন কাজ করেও নিজের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন করতে পারিনি। তখন সিদ্ধান্ত নিই দেশে গিয়ে কিছু একটা করব। পরে ২০০৯ সালে দেশে ফিরে আসি এবং চরম অর্থ সংকটে পড়ি। হতাশায় ভুগতে থাকি। এরপর ইউটিউব ভিডিওতে দেশের বিভিন্ন স্থানে উন্নত জাতের মুরগির খামার দেখে উদ্বুদ্ধ হই। মাত্র ২ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করি। উন্নত জাতের সোনালি হাইব্রিড মুরগির ২০টি ডিম নরসিংদী থেকে সংগ্রহ করি। শুরু হয় মুরগি পালন। এরপর ঢাকার মিরপুর থেকে আরও ২০০ মুরগি কিনে এনে ‘প্রবাস বন্ধু পোলট্রি অ্যান্ড চিকস’ নামে খামার গড়ে তুলি। তারপর আর  পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আমার ফার্মে চারটি শেডে ১৫-১৬ হাজার মুরগি রয়েছে। এখানে প্যারেন্টস মুরগি আছে ৭ হাবার ৫০০ এবং রানিং ডিম আছে ২ হাজার। সেখান থেকে প্রতিদিন ৭০ শতাংশ ডিম সংগ্রহ করা হয়। ডিম থেকে প্রতি মাসে ২৮-৩০ হাজার বাচ্চা উৎপাদন করা হয়। বাচ্চাগুলো দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার খামারে নিজস্ব পরিবহনে সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি বাচ্চা ২৬-৩৫ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। তিনি জানান, প্রবাসে থাকাকালীন প্রতি মাসে ১০-১৫ হাজার টাকা আয় হতো। এখন আমার খামারে ১৬ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য খরচ দিয়ে প্রতি মাসে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর