সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

আগেভাগেই মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীরা

সংসদ নির্বাচনের হালচাল - রাজবাড়ী

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

আগেভাগেই মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীরা

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে জমে উঠেছে রাজবাড়ীর মাঠের রাজনীতি। জেলার দুটি আসনেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন। বর্তমানে আসন দুটি আওয়ামী লীগের দখলে। আবারও আসন দুটি ধরে রাখতে চায় দলটি। তবে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি জয় পেতে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। উভয় দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ভোটের মাঠে ছোটাছুটি করছেন।

প্রধান এই দুই দলের পাশাপাশি মাঠে নেমেছে জাতীয় পার্টিও। একসময় রাজবাড়ীতে জাতীয় পার্টির শক্ত অবস্থান থাকলেও বর্তমানে তাদের সেই অবস্থানে ভাটা পড়েছে।

রাজবাড়ী-১ : রাজবাড়ী জেলা সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলা নিয়ে রাজবাড়ী-১ আসন। আসনটি দীর্ঘদিন ধরে রেখেছে আওয়ামী লীগ। আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা।

সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজী কেরামত আলী এবারও রাজবাড়ী-১ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। নৌকা প্রতীক পেতে মাঠে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী। নৌকার মনোনয়নের ব্যাপারে তাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছেন তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী। এ ছাড়া দলীয় মনোনয়ন চাইবেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সালমা চৌধুরী (রুমা), মো. রেজাউল হক রেজা, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী মর্জি, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি কামরুন নাহার চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহম্মদ আলী চৌধুরী, জেলা সহ-সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আবদুল জব্বার, রাজবাড়ী সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা চৌধুরী রন্টু। অন্যদিকে বিএনপি প্রতিটি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি রাজবাড়ীতে সফল করছে। এখানে অন্দোলন-সংগ্রামে বেশ এগিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। আসনটি ফিরে পেতে মরিয়া বিএনপি। তবে দলের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সঙ্গে সাবেক সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় আছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো. আসলাম মিয়া, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকেও এ আসনে চালানো হচ্ছে জোর প্রচারণা। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির জেলা সম্মেলন শেষ হওয়ার পর দলীয় নেতা-কর্মীরা চাঙা রয়েছেন। জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন, দলের জেলা সভাপতি হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোকসেদুর রহমান খান মমিন, পার্টির সাবেক সমন্বয়কারী আক্তারুজ্জামান হাসান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহাদত হোসেন মিল্টন, সাবেক জেলা যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল মাহমুদ।

রাজবাড়ী-২ : জেলার পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজবাড়ী-২ আসন। আসনটিতে চারবার আওয়ামী লীগ, দুইবার বিএনপি, একবার জামায়াতে ইসলামী, দুইবার জাতীয় পার্টি ও দুইবার জাসদ মনোনীত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে। এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজবাড়ী-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিম। সর্বশেষ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে জিল্লুল হাকিমকে সভাপতি করায় নেতা-কর্মীরা তাকে পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত করতে তৎপর। এ ছাড়া মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী হক। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া রাজবাড়ীতে সরব না থাকলেও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সানাল। আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক উপকমিটির সাবেক সদস্য মাহামুদুল হাসান রাসেলও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। অন্যদিকে আসনটি পুনরুদ্ধারে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির দুই নেতা। দলীয় মনোনয়ন চাইবেন সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নাসিরুল হক সাবু, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ  এবং জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি লায়ন মো. আবদুর রাজ্জাক খান। জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা এ বি এম নূরুল ইসলাম ও জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন মিয়া মৃত্যুবরণ করায় দলটির রাজনীতি এ জেলায় ভাটা পড়তে শুরু করে। তবে এবার এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন পাংশা উপজেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি মো. লোকমান হোসেন।

সর্বশেষ খবর