হঠাৎ উত্তাপ বেড়েছে কলমানি মার্কেটে। এটাকে ব্যাংক খাতের তারল্য সংকটের আভাস হিসেবে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ নিজেদের কাছে প্রয়োজন মেটানোর মতো নগদ টাকা না থাকলেই কেবল এ মার্কেট থেকে ব্যাংকগুলোর ধারের প্রবণতা বাড়ে। দৈনন্দিন কিংবা স্বল্পমেয়াদি নগদ টাকার চাহিদা মেটাতে ব্যাংকগুলো এ মার্কেট থেকে ধার নিয়ে থাকে। ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারল্য সংকটে বাড়ায় কলমানির সুদহার ও লেনদেন বেড়েছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের দৈনন্দিন খরচ বেড়েছে। ফলে চাহিদা মেটাতে মানুষের মধ্যে সঞ্চয় ভেঙে ফেলার প্রবণতা বেড়েছে; যা মূলত তারল্য সংকট তৈরি করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ব্যাংক খাতে গত এক বছরে অতিরিক্ত তারল্য কমেছে ৬৫ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর হাতে ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও (সিআরআর) ও স্টেচুয়েরি লিকুইডিটি রেশিও (এসএলআর) রাখার পর ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অতিরিক্ত তারল্য ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা, ওই বছরের ডিসেম্বর শেষে কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৮ কোটি টাকায়। অর্থাৎ এক বছরে অতিরিক্ত তারল্য কমেছে ৬৫ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গতকাল এ মার্কেট থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ শতাংশ সুদে লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ২ কোটি টাকার বেশি। এক সপ্তাহ আগে ১৯ জানুয়ারি গড় ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে এ মাকের্টে লেনদেন হয়েছিল ৪ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। আর চলতি মাসের শুরুতে ১ জানুয়ারি লেনদেন হয় ৩ হাজার কোটি টাকা। সেদিন সুদ ছিল ৬ শতাংশের কম। এর আগে ২৬ ডিসেম্বর লেনদেন হয় ২ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। সুদ ছিল ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এক মাসের ব্যবধানে কলমানি মার্কেটে লেনদেন বেড়েছে ২ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসে কলমানি মার্কেটে চাহিদা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। গতকাল আন্তব্যাংক ওভারনাইট কলমানি রেট গড়ে ৭ শতাংশ সুদহারে লেনদেন হয়েছে, যা ২০১৬ সালের মে মাসের পর সর্বোচ্চ।