শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

আবারও জয় চায় আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়াতে চায় বিএনপি

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

আবারও জয় চায় আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়াতে চায় বিএনপি

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুরের সব কয়টি আসনেই আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা যাতায়াত শুরু করে দিয়েছেন। বর্তমানে জেলার সব আসনই আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের দখলে। আগামী নির্বাচনেও জয় ধরে রাখতে চায় দলটি। আর ঘুরে দাঁড়িয়ে আসন ফিরে পেতে চায় বিএনপি। তবে প্রায় সব আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিরই লড়াই হবে- এমনটাই বলছেন তৃণমূলের সবাই।

কথা বলে জানা জায়, বিএনপি দলীয় জোট ও বর্তমান মহাজোট সরকারের উন্নয়নের পার্থক্য ও মূল্যায়ন-অবমূল্যায়নের হিসাব-নিকাশ কষছেন সাধারণ মানুষ। বিএনপির রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি পালন করতে না পারার কথাও আলোচনা হচ্ছে। আবার নেতা-কর্মীদের পাওয়া না পাওয়ার নানা হিসাব-নিকাশ নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

দিনাজপুর-১ (কাহারোল-বীরগঞ্জ) : মনোরঞ্জন শীল গোপাল এ আসনের বর্তমান এমপি।  আগামীতেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন।  এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আবু হুসাইন বিপু, বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া জাকা, কাহারোল উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মালেক সরকার, বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি আমিনুল ইসলাম।

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বীরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মনজুরুল ইসলাম মনজু। এ ছাড়া দিনাজপুর উত্তর জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা খোদা বক্স, বীরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিনুর ইসলাম নিজ নিজ দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী।

দিনাজপুর-২ (বিরল ও বোচাগঞ্জ) : নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এ আসনের বর্তমান এমপি। তিনি আবারও দলীয়  মনোনয়ন লাভে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। এ ছাড়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী সতীশচন্দ্র রায়ের ছেলে ডা. মানবেন্দ্র রায়ও মনোনয়নপ্রত্যাশী। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ দিনাজপুরের সদস্যসচিব এবং জেলা শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি জেলা বিএনপি নেতা মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, জেলা সহসভাপতি মোজাহারুল ইসলাম, জেলা সদস্য সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাক, বিরল উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ন ম বজলুর রশিদ, জেলা সদস্য আবদুল আজিজ। জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর উত্তর জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ আফজালুল আনাম এ আসনের সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী। বোচাগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও জাতীয় যুবসংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, বোচাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জুলফিকার হোসেন সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী। এ ছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের হাবিবুর রহমান, মুসলিম লীগের এরশাদ হোসেন।

দিনাজপুর-৩ (সদর) : এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে শক্ত অবস্থানে আছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইতে পারেন জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান চৌধুরী মাইকেল। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার নাম ছাড়াও সম্ভাব্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও দিনাজপুর পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা সহসভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন। বেগম খালেদা জিয়ার বড় বোন, সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত খুরশিদ জাহান হক চকলেটের বড় ছেলে শাহরিয়ার আকতার হক ডনও দলীয় প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে। জামায়াতে ইসলামীর উত্তর জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাইনুল আলম দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী। জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করলে দিনাজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শফি রুবেল মনোনয়নপ্রত্যাশী।

দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) : এ আসনের বর্তমান এমপি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এবারও তিনি সম্ভাব্য প্রার্থী। এ ছাড়া প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন, মিজানুর রহমান মানু, সাবেক জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সদস্য আলহাজ আখতারুজ্জামান মিয়া, জেলা সহসভাপতি ও লুসাকা গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি মো. হাফিজুর রহমান হাফিজ, সাবেক এমপি আবদুল হালিম। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী দলীয় রংপুর অঞ্চলের টিম সদস্য ও সাবেক চিরিরবন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আফতাবউদ্দীন মোল্লা। জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- খানসামার আহ্বায়ক মোনাজাত উদ্দিন, সদস্যসচিব হালিম হাওলাদার, চিরিরবন্দর জাতীয় পার্টির সভাপতি ওয়াজেদ আলী।

দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর ও ফুলবাড়ী) :  এ আসনে আওয়ামী লীগের সাতবারের এমপি, জেলা সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এবারও দলের সম্ভাবনাময় প্রার্থী। এ ছাড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জাকারিয়া জাকির, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, ডা. সাজ্জাদ হোসেন দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন, জেলা বিএনপির প্রবীণ নেতা এ জেড এম রেজওয়ানুল হক। তিনি প্রার্থী না হলে তার ভাই সাবেক পার্বতীপুর পৌর মেয়র ও বিএনপি নেতা মেনহাজুল হক মনোনয়ন চাইতে পারেন। এ ছাড়া বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন দলীয় জেলা নেতা জাকারিয়া বাচ্চু, জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদত ইসলাম শাহজুল, মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতা ও সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা মনছুর আলী সরকার। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন আনারুল ইসলাম। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. সোলায়মান সামি, জেলা সহসভাপতি নুরুল ইসলাম দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা মতিউর রহমানের নামও প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে।

দিনাজপুর-৬ (নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর ও বিরামপুর) : এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- দলের বর্তমান এমপি শিবলি সাদিক। এ ছাড়া দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা, ড. আজিজুল হক চৌধুরী, নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, বিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মন্ডল, বিরামপুর আওয়ামী লীগ নেতা পারভেজ কবির, বিরামপুরের সাবেক পৌর চেয়ারম্যান অধ্যাপক আক্কাস আলী প্রমুখ। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম দলের সম্ভাব্য প্রার্থী। জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- দলের  কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা সভাপতি এবং বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন। ন্যাপ কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও সাবেক এমপি কাজী লুৎফর রহমান এ আসনে মহাজোটের সম্ভাব্য প্রার্থী হতে চান বলে তার অনুসারীরা জানিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর