শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

এখনো চলছে স্টল নির্মাণ

মোস্তফা মতিহার

এখনো চলছে স্টল নির্মাণ

বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দেখে বোঝার উপায় নেই বইমেলার ভিতরকার চিত্র। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও একাডেমির সামনের রাস্তাটি ছিমছাম পরিচ্ছন্ন থাকলেও উদ্যানের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। গতকাল মেলার দ্বিতীয় দিনেও প্রায় অর্ধ শতাধিক স্টলে নির্মাণকাজ চলছিল।

দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো প্রকাশক স্টল ও প্যাভিলিয়নের নির্মাণকাজ শেষ করতে না পারলে বইমেলার নীতিমালায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা বলা থাকলেও শেষ পর্যন্ত নীরব বাংলা একাডেমি। যার কারণে স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণে প্রতি বছরই গাফিলতির পরিচয় দেন অনেক প্রকাশক। মেলার সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুটজুড়ে এখনো ধুলোর প্রাধান্য, যত্রতত্র পড়ে থাকা স্তূপীকৃত পলিথিন, সিমেন্টের বস্তা, কাঠ, বাঁশ, ইটসহ নির্মাণসামগ্রী ও নির্মাণশ্রমিকদের হাতুড়ি-বাটালের টুংটাং শব্দ মেলায় আগতদের বিরক্তির কারণ হয়ে দেখা দেয়। অন্যদিকে, বিগত বছরগুলোতে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট অংশের প্রবেশদ্বার খোলা থাকলেও এবার তা বন্ধ করে দিয়ে জনসাধারণকে মেলায় প্রবেশে বিঘ্ন ঘটানো হয়েছে।

করোনার চোখরাঙানি শেষে এবার মেলা প্রথা অনুযায়ী ভাষার মাসের প্রথম দিন শুরু হওয়ায় মেলা নিয়ে লেখক ও পাঠকদের অনেক বেশি প্রত্যাশা, কিন্তু বেশকিছু প্রকাশকের গাফিলতি ও আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির অনিয়মের মেলায় বিগত বছরগুলোর  শুরুর দিকের অনিয়মের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে অমর একুশে বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি। অন্যান্য বছর শুরুর দিকে মেলা কিছুটা অগোছালো থাকলেও ‘এবার সে চিত্র দেখা যাবে না’- মেলা শুরুর আগে এমন আশ্বাস দিলেও বরাবরের মতো এবারও কথা রাখতে পারেনি বাংলা একাডেমি। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখার কথা শুরু থেকে বলা হলেও গতকাল সন্ধ্যার পর মেলার মূল প্রবেশ পথ থেকে দোয়েল চত্বর ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত। শুধু তাই-ই নয়, মেলার অভ্যন্তরে লিটলম্যাগ চত্বরটিতেও ছিল না পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। অন্যদিকে দুই দিন কেটে গেলেও নামাজের স্থান ও অজুর স্থান এবং শৌচাগারে কোনো পানির ব্যবস্থা করা হয়নি। যার কারণে মেলায় আগত অনেকেই বিড়ম্বনার শিকার হন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে আগত আরাফাত হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, খুব উচ্ছ্বাস নিয়ে মেলায় এসেছিলাম। কিন্তু, এত নোংরা ও অগোছালো পরিবেশ এবং ধুলাবালির কারণে আমি হতাশ।

নতুন বই : গতকাল মেলার দ্বিতীয় দিনে নতুন বই এসেছে ২১টি। এর মধ্যে গল্পের বই দুটি, উপন্যাস একটি, প্রবন্ধ তিনটি, কবিতার বই দুটি, গবেষণা তিনটি, জীবনী দুটি, নাটক একটি, বিজ্ঞান চারটি, রাজনীতি একটি, অনুবাদ একটি ও অন্যান্য একটি। উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো বাংলা একাডেমি প্রকাশিত রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আত্মজীবনী ‘আমার জীবননীতি আমার রাজনীতি’, হাসান আজিজুল হকের অনুবাদের বই ‘দ্য ম্যাটার অব সাবিত্রি’, আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত আনোয়ারা সৈয়দ হকের (বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যার জীবনভিত্তিক প্রথম উপন্যাস ১৯৭৫-১৯৮২), ঐতিহ্য এনেছে পিয়াস মজিদের কাব্যগ্রন্থ ‘ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’, সাহিত্য সমালোচনা এনেছে সৈয়দ শামসুল হকের ‘কবিতার কিমিয়া’ ইত্যাদি।

মূল মঞ্চ : বিকাল ৪টায় মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলা লোকসাহিত্যে হাটুরে’ কবিতা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিলু কবীর। আলোচনায় অংশ নেন বেলাল হায়দার পারভেজ, আহমেদ মাওলা এবং তানভীর আহমদ সিডনী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ। সবশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি আসাদ মান্নান, নাসির আহমেদ, মাহবুব আজিজ। আবৃত্তি করেন আশরাফুল আলম, লায়লা আফরোজ এবং ফয়জুল্লাহ সাঈদ। পুঁথিপাঠ (হাটুরে কবিতা) করেন পাবনার ফকির আবুল হোসেন। সংগীত পরিবেশন করেন মহিউজ্জামান চৌধুরী, তিমির নন্দী, রুমানা ইসলাম, তানজিনা করিম স্বরলিপি এবং আজমা সুরাইয়া শিল্পী। আজ সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মেলায় শিশুপ্রহর চলবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর