রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডাকাতি মামলা, বকশীগঞ্জ আওয়ামী লীগ সভাপতিকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিনা বেগমের বাড়িতে কথিত ডাকাতির ঘটনায় দলীয় নেতা-কর্মীদের ফাঁসানোর জন্য তিনি (শাহিনা বেগম) সাজানো ডাকাতি মামলা দায়ের করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এ মামলায় বকশীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বকশীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জুমান তালুকদারকে গ্র্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। মামলার মূল রহস্য উদঘাটনে বাদীসহ ডাকাতির সময় উপস্থিত সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে এ মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। মামলার কারণে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা এখন ঘরছাড়া। জানা গেছে, এ ঘটনায় পুলিশসহ জাতীয় একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নামলেও উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখনো খোয়া যাওয়া মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। সাজানো এ ডাকাতির ঘটনায় পুলিশসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগও বেশ বিব্রত।

স্থানীয়রা এ মামলাটিকে সাজানো ও হয়রানিমূলক দাবি করে মামলাটি দ্রুত প্রত্যাহার চেয়েছেন। মামলার মূল রহস্য উদঘাটনে মামলার বাদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিনা বেগম ও ডাকাতির সময় উপস্থিত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দাবি জানিয়েছেন।

মামলায় উল্লিখিত ৭৭ ভরি স্বার্ণালংকার ও নগদ ২১ লাখ টাকা আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা। যদিও মামলায় ২১ লাখ টাকা ধান বিক্রির আয় হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধিকাংশ সময় ঢাকায় অবস্থান করেন। বাড়িতে অরক্ষিত অবস্থায় এত পরিমাণ স্বর্ণালংকার রাখা নিয়ে সন্দেহ করে এসব স্বর্ণ কেনার রসিদ ও সঠিকভাবে আয়কর দেওয়া কি না, এ প্রশ্ন তোলেন।

২১ লাখ টাকার ধান বিক্রি করতে বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী ২ হাজার মণ ধানের প্রয়োজন। এত বিশাল পরিমাণের ধান কোথায় রাখা হয়েছিল বা এসব ধান কোথায় উৎপাদন হয়েছে সে প্রশ্ন তোলেন। ২ হাজার মণ ধান উৎপাদন করতে কমপক্ষ ১৫০ একর জমির পরিমাণ হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, এত পরিমাণ জমি শাহিনা বা তার পরিবারের কারও নেই।

গত শুক্রবার সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জামালপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক জোবাইদুল ইসলাম জানান, বকশীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জুমান তালুকদারসহ এ মামলায় ১৫ জনকে আটক করে জেলে পাঠানো হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় খোয়া যাওয়া মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে ডাকাতির মামলায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। দ্রুত এ মিথ্যা ও সাজানো মামলা প্রত্যাহার চায় দলটির একটি অংশ। মামলা প্রত্যাহার ও আওয়ামী লীগ নেতার মুক্তি দাবিতে মানববন্ধনও করা হয়। মানববন্ধনে বক্তরা দাবি করেন, মামলাটি সাজানো ও ভিত্তিহীন। ৭৭ ভরি সোনা ও ২১ লাখ টাকা বাড়িতে রাখার অভিযোগও ভুয়া।

এদিকে এ ঘটনায় বকশীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বকশীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জুমান তালুকদারকে আটকের পর আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের একটি অংশ। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আবু জাফর বলেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই এ ডাকাতির ঘটনা সাজানো হয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সাইদুর রহমান লাল বলেন, ডাকাতির ঘটনা সাজিয়ে একটি মহলের ইশারায় প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তিনি সত্য উদঘাটনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিনা বেগমসহ ডাকাতির সময় উপস্থিত বাড়ির লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান।

সর্বশেষ খবর