শিরোনাম
শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

অজ্ঞান না করে অপারেশন যমজ সন্তানসহ নারীর মৃত্যু

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

রোগীকে অজ্ঞান না করে ময়মনসিংহে কিডনিতে পাথরের অপারেশন করায় যমজ সন্তানের অন্তঃসত্ত্বা রেখা আক্তারের মৃত্যু হয়েছে! ১৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা রেখা আক্তার (২৫) জেলার ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়ার মাহবুল আলমের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টায় নগরীর চরব্রাহ্মপল্লীর ‘পেশেন্ট কেয়ার’-এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

নিহতের স্বামী মাহবুল আলম বলেন, ‘সম্প্রতি আমার স্ত্রীর কিডনিতে পাথর আছে বলে জানতে পারি। হাসপাতালে আনার পর সেখান থেকে জানায় পেটে বাচ্চা রেখেই পাথরের অপারেশন করা যাবে কোনো সমস্যা হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সেই আশ্বাসে বৃহস্পতিবার রাতে অন্তঃসত্ত্বা রেখাকে পেশেন্ট কেয়ারে ভর্তি করি। প্রথমে রাত ৮টায় অপারেশন করার কথা ছিল। পরে ১০টায় অপারেশন করবে বলে জানায়। পরে রাত ১টার দিকে অপারেশন করে। অপারেশন শুরুর পর ওটি রুম থেকে চিৎকারের শব্দ শুনতে পাই। চিৎকারের কারণ একজন নার্সের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান অজ্ঞান করার ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। তাই এমন করছে। এর পরও বহুবার আমরা ওটির ভিতর থেকে চিৎকারের শব্দ শুনতে পাই। অপারেশন শেষে পোস্ট-অপারেটিভ রুমে রেখে সবাই চলে যায়।’ তিনি আরও জানান, ‘পরে রাত ৩টার দিকে আমি পোস্ট-অপারেটিভ রুমে গিয়ে রেখার কোনো সাড়া না পেয়ে নার্সকে বিষয়টি জানাই। নার্স এসে দেখে দৌড়ে আরেকজনকে ডেকে আনেন। তিনি এসে দেখেই বলেন, রোগীকে মেরে ফেলছিস। পরে তারা তড়িঘড়ি অ্যাম্বুলেন্সে চুরখাই সিবিএমসিবি হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক রেখাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আবারও অ্যাম্বুলেন্সে পেশেন্টকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।

সেখানে ভোর হলে চিকিৎসকরা হাসপাতাল থেকে আমাদের রোগীকে নিয়ে চলে যেতে বলেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতালের চারপাশে লোকজন জড়ো হলে ক্লিনিক মালিক ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাসপাতালে তালা লাগিয়ে চলে যায়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।’

নিহতের ভাই আবদুল জব্বার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘গভীর রাতে রোগীকে অজ্ঞান না করে অপারেশেন করায় ব্যথা সহ্য করতে না পেরে আমার বোন মারা গেছে।’ এ বিষয়ে পেশেন্ট কেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, ‘অপারেশন কোন চিকিৎসক করেছেন তা আমার জানা নেই। রোগীর লোকজন বিষয়টি বলতে পারবেন।’ এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ফারুক হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমরাও জেনেছি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর