বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

সংকটে জনজীবন বিপর্যস্ত : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থনৈতিক দুরবস্থা কাটাতে সরকারের পদত্যাগ চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি অপরিণামদর্শী ভ্রান্তনীতি ও চরম অব্যবস্থাপনার মাশুল দিতে গিয়ে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক সংকটে জনজীবন বিপর্যস্ত। গতকাল দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ফখরুল বলেন, এই সরকারের বিদায়ের পর যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা দ্রুত সমাধান করা হবে। সরকারের পতন ছাড়া এই সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। তারা এত বেশি দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে গেছে যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছে। তিনি বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য আর্থিক খাতের সংস্কার অত্যাবশ্যক। টেকসই অর্থনীতির প্রয়োজনে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উন্নতি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা দরকার। কর-শুল্ক, আর্থিক খাত, ব্যাংকিং সেক্টর, বাজেট ব্যবস্থাপনা এবং বাণিজ্যনীতির সংস্কার আবশ্যক। এ জন্য প্রয়োজন দুর্নীতিমুক্ত আইনের শাসন এবং প্রকৃত অর্থেই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আশা করে বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও আর্থিক খাতে কার্যকর সংস্কারে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আইএমএফ বিশেষ সহযোগিতার হাত বাড়াবে। ফখরুল বলেন, আইএমএফের শর্ত পূরণে সরকার আন্তরিক নয়- আইএমএফ চাচ্ছে সরকারি ব্যাংকগুলোতে ১০ শতাংশের নিচে ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ৫ শতাংশের নিচে থাকুক খেলাপিঋণের পরিমাণ, আগামী জুন থেকেই তা দৃশ্যমান করতে হবে। পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে ২০২৬ এর মধ্যে। কিন্তু সরকার খেলাপিঋণ আদায়ে বাস্তব, কার্যকর ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ না নিয়ে যতসব ‘অদ্ভুত উপায়ে’ খেলাপিঋণ কমানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। এটা এক ধরনের ‘আই ওয়াশ’। কৌশলে এক ব্যাংকের আদায়যোগ্য খেলাপিঋণ আরেক ব্যাংকে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আবার বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের খেলাপিঋণ পুনঃঅর্থায়ন ও পুনঃতফসিলীকরণের মাধ্যমে নবায়ন করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ অবলোপনের নীতিমালা আরও শিথিল করেছে। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সহায়তা ছাড়া খেলাপিঋণ কমানো সম্ভব নয়। আইএমএফের ঋণপ্রাপ্তির শুরুতেই এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, ঋণ খেলাপি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সরকার আন্তরিক নয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ। এদিকে গতকাল সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে যুবদলের নতুন কমিটির উদ্যোগে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফখরুল বলেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হবে। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।

 

সর্বশেষ খবর