বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

শামীম শিকদার আর নেই

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

শামীম শিকদার আর নেই

একুশে পদকপ্রাপ্ত ও টিএসসির স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরের ভাস্কর শামীম শিকদার আর নেই। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন শামীম শিকদার ভাস্কর্য পার্কের কিউরেটর ইমরান হোসেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি দীর্ঘদিন কিডনি, রেসপিরেটোরি মেডিসিন, হৃদরোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। তার মৃত্যুতে দেশের শিল্পাঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। মৃত্যুর সংবাদে হাসপাতালে ছুটে যান সুহৃদ, স্বজন ও শুভাকাক্সক্ষীরা। আলোচিত কমিউনিস্ট নেতা সিরাজ সিকদার তার আপন বড় ভাই। রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত শামীম শিকদারের দাফনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেনি তার পরিবারের সদস্য ও সুহৃদরা। ১৯৫৫ সালের ৯ আগস্ট বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন শামীম শিকদার। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৮৬ সালে সহকারী অধ্যাপকের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৯৩ সালে অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৯৯ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন প্রখ্যাত এই ভাস্কর। চারুকলা অনুষদের শিক্ষকতা থেকে অবসর নিয়ে তিনি ইংল্যান্ড চলে যান। কখনো সেখানে, কখনো দেশে বসবাস করেছেন। নিভৃতেই কাটিয়ে দিলেন নিজের জীবন। ১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। ১৯৮৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অবস্থিত স্বোপার্জিত স্বাধীনতা ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। ভাস্কর্যটির মূল বেদিতে আছে একাত্তরের বিভিন্ন ঘটনার চিত্র। স্বামী বিবেকানন্দের ভাস্কর্য নির্মাণ করেন ১৯৯৪ সালে। ২০০০ সালে স্বাধীনতার সংগ্রাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য উদ্যানে বিখ্যাত ব্যক্তিদের ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। ১৯৮২ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নির্মিত হয়েছে তার বিখ্যাত শিল্পকর্ম ‘স্ট্রাগলিং ফোর্স’। আশা ও উদ্দীপনার একটি পাখি নামের ভাস্কর্যটি ঢাকার ফার্মগেটে অবস্থিত মাদার তেরেসা চ্যারিটি হাসপাতালে স্থাপিত হয়েছে ১৯৯৪ সালে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তার নির্মিত ভাস্কর্য আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আনোয়ার পাশা ভবনে তার নির্মিত অনেক ভাস্কর্য রয়েছে। ১৯৭৫ সালে চারুকলা অনুষদে শামীম শিকদারের একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৬ সালে লন্ডনের কমনওয়েলথ ইনস্টিটিউটে, ১৯৮২ সালে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এবং ওই বছরই শিল্পকলা একাডেমিতে তার ভাস্কর্যের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া তার অনেক একক প্রদর্শনী হয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক শিল্প গ্যালারিতে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর