মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
বায়তুল মোকাররমে বসুন্ধরার আয়োজন

প্রতিদিন ইফতার ২ হাজার রোজাদারের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিদিন ইফতার ২ হাজার রোজাদারের

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পূর্ব সাহান। ইফতারের পূর্বমুহূর্তে সামনে ইফতার নিয়ে বসে আছেন প্রায় ২ হাজার রোজাদার। স্বেচ্ছাসেবকদের ইফতার বণ্টন নিয়ে ব্যস্ততা আর মুসল্লি কমিটির নেতাদের দিকনির্দেশনায় ভালোলাগার অনন্য দৃশ্য ফুটে উঠেছিল বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা সায়েম সোবহান আনভীরের উদ্যোগে রোজাদারদের ইফতার করানোর এই পবিত্র কাজটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে জাতীয় মসজিদে আগত রোজাদারদের মাঝে। যার কারণে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বায়তুল মোকাররমে ছুটে আসেন রোজাদাররা। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জাতীয় মসজিদে আগত রোজাদার মুসল্লিরা।

রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা ও অফিসপাড়াখ্যাত মতিঝিলের অদূরে বলে অনেকেই অফিস শেষ করে বসুন্ধরার ইফতারের স্বাদ নিতে চলে আসছেন জাতীয় মসজিদে। ইফতারের এই আয়োজনে সবশ্রেণির মানুষের মিলনমেলায় শ্রেণিবৈষম্য ও সব ভেদাভেদ ভুলে একই সঙ্গে ইফতার করছেন রোজাদাররা। এ এক অকল্পনীয় ভালোলাগার দৃশ্য। হৃদয়ের গহিনে ছুঁয়ে যাওয়ার মতো দৃশ্য। গতকাল সরেজমিনে এমন দৃশ্যই লক্ষ্য করা গেছে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে।

ইফতারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের মুসল্লি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মানিক বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময় দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকে। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো বায়তুল মোকাররমের ইফতার আয়োজন। করোনার বছর থেকে টানা দুই বছর বন্ধ ছিল ইসলামী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররমের ইফতার আয়োজন। আমাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন। প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার পর বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর আমাদের জিজ্ঞাসা করেন ইসলামের খেদমতে আমি কী কী কাজ করতে পারি? তখন আমরা তাকে জানাই করোনার বছর থেকে জাতীয় মসজিদে ইফতার বন্ধ রয়েছে। নতুন করে যদি ইফতার চালু করা যায় তাহলে অগণিত রোজাদারদের ইফতার করানো যাবে। সঙ্গে সঙ্গেই এই মহতী প্রস্তাবটি তিনি সাদরে গ্রহণ করেন। আর সেই থেকেই জাতীয় মসজিদে আগত রোজাদারদের জন্য ইফতার আয়োজনের ব্যবস্থা করেন। গত বছর থেকে এই উদ্যোগটি রোজাদার ও মুসল্লি কমিটির মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সায়েম সোবহান আনভীরের অর্থায়নে গত বছর আমরা পুরো রমজানে ৩৬ হাজার রোজাদারকে ইফতার করিয়েছি। কিন্তু এ বছর প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার রোজাদারকে ইফতার করানোর ব্যবস্থা করেছেন এই ধর্মানুরাগী। এই বছর প্রায় ৬০ হাজার রোজাদারকে ইফতার করানো হবে। দেশে অনেক শিল্পপতি আছেন ঠিকই, কিন্তু এই ধরনের ভালো ও মহতী কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার মতো শিল্পপতির সংখ্যা খুবই কম। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যাদেরকে কবুল করেন শুধু তাদের দিয়েই ইসলামের খেদমত করান। প্রতিদিন দুই হাজার রোজাদারের জন্য ইফতার আয়োজনের পাশাপাশি রমজানজুড়ে হেফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে। মাসব্যাপী হেফজুল কোরআনের এই প্রতিযোগিতা ২৬ রমজানে গ্র্যান্ড ফাইনালের মাধ্যমে শেষ হবে। আর ২০ মে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বিজয়ীদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কৃত করা হবে। সেখানে হাফেজে কোরআনদের মিলনমেলায় অনন্য হয়ে উঠবে আইসিসিবি। ইসলামের খেদমতে সায়েম সোবহান আনভীরের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। বসুন্ধরা গ্রুপ যাতে এই ধরনের ভালো কাজে আরও বেশি বেশি সম্পৃক্ত থাকতে পারে সেজন্য মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের জন্য অন্তরের অন্তস্তল থেকে অনেক অনেক দোয়া রইল। আল্লাহ যেন তাদের নেক হায়াত দান করেন ও সবসময় সুস্থ রাখেন মুসল্লিদের পক্ষ থেকে এই দোয়াই রইল।

সর্বশেষ খবর