বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

সমাজপতিদের না জানিয়ে বিয়ে করায় ঘরছাড়া নবদম্পতি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারে সমাজপতিদের না জানিয়ে বিয়ে করায় নববিবাহিত স্বামী-স্ত্রী নিজ বাড়িতে যেতে পারছেন না। বিয়েতে গ্রামের মুরব্বিদের দ্বিমত থাকায় পাত্র ও পাত্রী পক্ষের কেউই নবদম্পতিকে ঘরে তুলতে পারছেন না। এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারের কাছে তিনজনকে অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কনে পলি আক্তার। জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আপার কাগাবালা ইউনিয়নের উত্তর কাগাবলা গ্রামের ইমন মিয়ার সঙ্গে গত ১৯ মার্চ সাতবাক গ্রামের পলি আক্তারের বিয়ে হয়। ধর্মীয় বিধান মেনে চার লাখ টাকা কাবিন নির্ধারণ করে নিকাহনামা রেজিস্টারের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কথা এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর বাধা হয়ে দাঁড়ান স্থানীয় মুরব্বিরা। গত ২৫ মার্চ পলি আক্তার ফেসবুকে ঘটনাটি নিয়ে পোস্ট দেওয়ার পর আলোচনায় আসে বিষয়টি। পলি আক্তার বলেন, আমার মা শিল্পী বেগম একজন সহজ-সরল মহিলা। আমার স্বামী আমাকে অপহরণ-ধর্ষণ করেছেন বলে মিথ্যা মামলা দেওয়ার জন্য আমার মাকে কুমন্ত্রণা দিচ্ছেন। আমার স্বামীর আত্মীয়-স্বজনকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তারা আমার স্বামীকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে বলে আমার মাকে জানিয়েছে। তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকে আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। আমি ও আমার স্বামী একসঙ্গে আত্মগোপনে আছি। আমি আমার স্বামীর বাড়িতে যেতে চাই। আমাদের সুন্দর জীবন দেওয়ার জন্য প্রশাসনসহ সবার সাহায্য চাই। আমি পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আপার কাগাবলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খলকু মিয়া (৫৫), আগিহুন গ্রামের রুজিনা আক্তার (৪০), সাতবাক গ্রামের বশির আহমদ সুনু মিয়াকে (৪০) অভিযুক্ত করে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পলি আক্তার। পলির স্বামী ইমন মিয়া বলেন, বিয়ের পর আমাদের পাশের গ্রাম ও বাজারের কিছু মোড়লের বাধায় পড়েছি। তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। আমার স্ত্রীকে নিয়ে ঘরে উঠতে পারছি না। অভিযুক্ত খলকু মিয়া বলেন, এখানে দুটি আলাদা সমাজ আছে। বিয়ে হলে তাদের মধ্যে ঝামেলা হবে। কনের পক্ষ আমার কাছে এসেছিল। তাদের সান্ত্বনা দিয়েছি। কাউকে হুমকি-ধমকি দেইনি। কেউ এর প্রমাণ দিতে পারবে না। ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইমন মোস্তফা বলেন, বিষয়টি জেনেছি। এখানে সামাজিক বাধা আছে। সমাধানের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। কেউ এখনো এ ঘটনা নিয়ে সংঘাতে জড়ায়নি। মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, থানায় এসে অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ওই দম্পতি আমাকে বিষয়টি জানালে তাদের থানায় গিয়ে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলেছি। আমরা তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করব।

সর্বশেষ খবর