শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রাচীন স্থাপত্যের তিন গম্বুজ শাহী মসজিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

প্রাচীন স্থাপত্যের তিন গম্বুজ শাহী মসজিদ

রাজশাহীতে প্রায় আড়াই শ বছর আগের তিন গম্বুজ শাহী মসজিদ প্রাচীন স্থাপত্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আজও। এর অসাধারণ নির্মাণশৈলী আজও নজর কাড়ছে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের। জনশ্রুতি আছে, এই মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করে সৃষ্টিকর্তার কাছে চাইলে পূরণ হয় মুসল্লিদের মনোবাসনা।

আধুনিক স্থাপত্য শিল্পের অনন্য নজির এই মসজিদ রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার প্রত্যন্ত গ্রাম বাগধানীতে অবস্থিত। যেখানে জড়িয়ে আছে সময়ের নানা উপাখ্যান। রাজশাহীতে কালের সাক্ষী হয়ে সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকা হাতেগোনা কয়েকটি মসজিদের মধ্যে এটি একটি। ঐতিহাসিক মসজিদটি সংরক্ষণ করছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর। এর প্রাচীন স্থাপত্যশৈলী যে কোনো পর্যটককে খুব সহজেই বিমোহিত করে। জনশ্রুতি আছে, একসময় মনোবাসনা পূরণে নামাজ আদায় করতে দেশের দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসতেন এই শাহী মসজিদে। যদিও এখন সেই লৌকিকতা নেই। এরপরও এক চিলতে প্রশান্তির পরশ পেতে শহরের কোলাহল ঠেলে মানুষ ছুটে যান মসজিদটিতে। নান্দনিক সৌন্দর্য দর্শনের জন্য যারা দেশের আনাচে-কানাচে চষে বেড়ান, নিঃসন্দেহে তাদের পিপাসা মেটাবে এ মসজিদ। মসজিদটির ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে সদর দুয়ার। সেখানে ফারসি হরফে লেখা একটি শিলালিপি আছে। যেখানে কালো অক্ষরে লেখা আছে মুন্সি মোহাম্মদ এনায়েতুল্লাহ বাংলা ১২০০ সালে নির্মাণ করেছেন এই শাহী মসজিদটি। তিন হাজার ২০০ বর্গফুট আয়তনের শাহী মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট, প্রস্থ ৪০ ফুট। মসজিদটির তিনটি মেহেরাব, তিনটি দরজা, দুটি জানালা ও একটি মিনার আছে। মসজিদটির চার কোনায় আছে মনোমুগ্ধকর নকশা খচিত গম্বুজ আকৃতির নান্দনিক পিলার। মাথার ওপরে আছে তিনটি সুদৃশ্য গম্বুজ। এ ছাড়া শাহী মসজিদের চারপাশের দেয়ালের ভিতর ও বাইরে চিনামাটিতে খচিত মনোরম নকশা আছে। পবার বাগধানী গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব আশরাফ আলী বলেন, একসময় মনোবাসনা পূরণের জন্য দূরদূরান্ত থেকে এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে মুসল্লিরা আসতেন। মানুষ বলত, এখানে নামাজ আদায়ের পর দোয়া কবুল হয়। এখনো অনেক মানুষ এই মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য যান। এ জন্য প্রতি শুক্রবার জুমার দিন মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় হয়। তিনি বলেন, তখন মসজিদ লাগোয়া পবার এই বারনই নদীতে বিশালাকার ঘাট ছিল। নদী তীরের এই ঘাট ঘেঁষে সপ্তাহে দুই দিন হাটও বসত। এখন সেই জমজমাট অবস্থা নেই। তবে শুক্র ও মঙ্গলবার এখনো হাট বসে। ১৯৯০ সালের ভূমিকম্পে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সংস্কার না করায় এরই মধ্যে মসজিদটির অনেক কিছুই কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তবে চার বছর আগে ঐতিহাসিক বাগধানী শাহী মসজিদের দায়িত্ব গ্রহণ করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর।

 

সর্বশেষ খবর