রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ-জাপায় একক, বিএনপিতে পাঁচ প্রার্থী

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

আওয়ামী লীগ-জাপায় একক, বিএনপিতে পাঁচ প্রার্থী

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৎপর রাঙামাটি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। রাজনৈতিক সংগঠনগুলোতেও চলছে নানা আলোচনা-পর্যালোচনা। তবে মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে। এ আসনে আবারও একক প্রার্থী হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার।

তবে বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন তা এখনো নিশ্চিত নন। দলীয় নেতা-কর্মীদের আলোচনায় আছে পাঁচ নেতার নাম। তারা হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সহধর্ম বিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ান, কেন্দ্রীয় সহ-উপজাতীয় বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) মণীষ দেওয়ান, সাবেক সংসদ সদস্য মনি স্বপন দেওয়ান, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপেন তালুকদার দীপু ও সাধারণ সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ মামুন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগ মরিয়া আবারও আসনটি ধরে রাখতে এবং বিএনপি মরিয়া আওয়ামী লীগের দুর্গ ভেঙে পুনরুদ্ধারে। তবে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে আছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন সন্তু লারমার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। তাদের প্রার্থী অনেকটা নিশ্চিত। তিনি হলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার। একই ভাবে তৎপর জাতীয় পার্টিও। দলীয় প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. হারুনুর রশিদ মাতব্বরের নাম।

আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তবে বিএনপি তৎপর নির্বাচন ও চলমান আন্দোলন নিয়ে। তৎপর হয়ে উঠেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও। সব মিলিয়ে নির্বাচন সামনে রেখে মাঠে আছেন এ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী সবাই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে কিছুটা ভিন্ন চিত্র। জাতীয় রাজনৈতিক দলের চেয়ে এখানে শক্তিশালী আঞ্চলিক দল। তাই নির্বাচনের মাঠে নিজেদের অস্তিত্ব টিকে রাখতে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোকে লড়াই-সংগ্রাম করতে হয়। উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের বিপর্যয়ের পর অনেকটা নড়বড়ে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগ। তাই তড়িঘড়ি করে শেষ করা হচ্ছে দল গোছানোর কাজ। ইতোমধ্যে জেলা এবং উপজেলাগুলোতে সম্মেলন শেষ হলেও কোন্দল দেখা দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে। তবে দলের সমস্যাকে বড় করে না দেখলেও নির্বাচনে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলকে কাল ভাবছে আওয়ামী লীগ। জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, দলীয়ভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী জেলা আওয়ামী লীগ। বর্তমান সরকারের তিন মেয়াদে যে উন্নয়ন হয়েছে, সে উন্নয়ন অন্য কোনো দলের সরকার কখনোই করেনি। তবে অবৈধ অস্ত্রধারীদের জন্য ঘুরে দাঁড়েতে পারছে না তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। হুমকি-ধমকি ও নির্যাতনের মুখে বাধ্য করা হচ্ছে দল ছাড়তে। নির্বাচন আসলে শুরু হয় অবৈধ অস্ত্রধারীদের তৎপরতা। স্বতস্ত্র প্রার্থীর নামে অস্ত্রধারীরা রাজনীতিতে প্রবেশ করতে চায়। তবুও একাদশ নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগের জয় বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। এবারের নির্বাচনেও অস্ত্র-নির্যাতন প্রতিহত করে পাহাড়ের মানুষ আওয়ামী লীগকেই ভোট দেবে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় না থাকলেও রাঙামাটিতে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থান যথেষ্ট শক্তিশালী। দলের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম গুছিয়ে আনা হয়েছে। নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের লড়াইয়ে স্নায়ুযুদ্ধে অবতীর্ণ জেলা শীর্ষ নেতারা। উপজেলায় কমিটি হয়েছে নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়ে। সমন্বয় করা হয়েছে পাহাড়ি-বাঙালি নেতৃত্বের। বর্তমানে জেলা নেতৃত্বের শীর্ষ স্থানে আছেন সভাপতি দীপেন তালুকদার দীপু ও সাধারণ সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ মামুন। বিভিন্ন কমিটিতে পদ-পদবির লড়াইকে ঘিরেই কোন্দল থাকলেও সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ সংগঠনটি। মিটিং-মিছিল আর সমাবেশে এখনো রাজপথ দখলে রেখেছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ মামুন বলেন, রাজপথে বৃহত্তর সংগঠনে পরিণত হয়েছে বিএনপি। রাঙামাটির ৫০টি ইউনিয়নে কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়েছে। জেলা বিএনপিরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে শক্ত অবস্থানে। জাতীয় পার্টি ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে জেলা ও উপজেলার কয়েকটি সম্মেলন। পর্যায় ক্রমে সাংগঠনিক তৎপরতা আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হারুনুর রশিদ মাতব্বর।

সর্বশেষ খবর