সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
জমে উঠেছে ঈদবাজার

কুমিল্লায় চাহিদার শীর্ষে খাদির পাঞ্জাবি-ফতুয়া

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লায় চাহিদার শীর্ষে খাদির পাঞ্জাবি-ফতুয়া

কুমিল্লার ঈদবাজারে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে খাদির রঙিন পাঞ্জাবি ও ফতুয়া। এ ছাড়া নারীদের থ্রিপিস ও শাড়ির চাহিদা রয়েছে। সচেতন ক্রেতারা ঈদের কেনাকাটায় স্থানীয় উৎপাদিত খাদির পোশাককে গুরুত্ব দিচ্ছেন।

বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি খাদি পোশাকের দাম। কাপড়ের মান ভালো ও রং পাকা হওয়ায় ক্রেতারা খাদিতে ঝুঁকছেন। খাদি কাপড় বিক্রি করা বিভিন্ন দোকানে দেখা গেছে, দাম কম হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণির ক্রেতার সমাগম ঘটছে। বিক্রেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, পাঞ্জাবি ৪০০-১৪০০ টাকা, শার্ট ৬০০-৭০০ টাকা, থ্রিপিস ৬০০-১৮০০ টাকা, শাড়ি ৭৫০- ১৮০০ টাকা দামে প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে বিছানার চাদর, বালিশের কভার,   খাদির থান কাপড়, ছোটদের পাঞ্জাবি ও শার্ট। কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য গবেষক আহসানুল কবীর বলেন, খাদির গোড়াপত্তন হয়েছে ১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে। ওই সময় শুধু খাদি কাপড় নয়, কুমিল্লার বেনারসি শাড়িরও তুমুল চাহিদা ছিল। সারা বিশ্বেই কুমিল্লার শাড়ি ও খাদি কাপড়ের নামডাক ছিল। স্বদেশি আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধী বিদেশি পণ্য বয়কটের ডাক দেন। মোটা কাপড়, মোটা ভাত-সর্বত্র এমন আওয়াজ ওঠে। স্বদেশি আন্দোলনের পর খাদি কাপড়ের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। মহাত্মা গান্ধী নিজেও খাদির চাদর পরিধান করতেন। কুমিল্লার মানুষও খাদি কাপড় পছন্দ করতেন। বড় বড় নেতারা খাদির পায়জামা, চাদর, পাঞ্জাবি পরে গৌরববোধ করতেন। এটার প্রচলন গত ৩০ বছর আগেও ব্যাপকহারে ছিল। খাদি কুমিল্লাকে ব্র্যান্ডিং করে। একে ভালোভাবে টিকিয়ে রাখা জরুরি। ঈদ-পূজায় মানুষ খাদি পোশাক পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আমেরিকা প্রবাসী জামাল হোসেন জানান, তিনি দেশে এলে খাদির শার্ট, ফতুয়া পাঞ্জাবি ও থ্রি পিস ক্রয় করেন। স্বজনদের জন্যও কুমিল্লার ঐতিহ্যের খাদি কাপড় নিয়ে যান। শিক্ষাবিদ এহতেশাম হায়দার চৌধুরী বলেন, খাদি কুমিল্লার ঐতিহ্য। খাদির বর্ণিল ডিজাইনের কারণে দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে। খাদির কাপড় উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রবীণ ব্যবসায়ী খাদিঘরের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, বর্তমানে খাদি শিল্পে অনেক নতুন নতুন ডিজাইন এসেছে। ১৯২১ সালের প্রেক্ষাপট ও চাহিদা এক নয়। শতবর্ষের খাদি পণ্য তার গুণগত মান বজায় রেখে আধুনিকতার সংমিশ্রণে প্রতিযোগিতার বাজারে চাহিদা ধরে রেখেছে। পৃথিবীর যেখানে বাঙালি কমিউনিটি আছে সেখানে খাদি কাপড়ের প্রসার ঘটেছে। বাংলাদেশের বিদেশি দূতাবাসে খাদিসহ দেশীয় পণ্যের প্রদর্শনী করলে তা পণ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটাতে সহায়ক হতে পারে।

সর্বশেষ খবর