শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

নাগরিক নেতাদের প্রচারণায় নামাবেন লিটন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করেই মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর পক্ষে প্রতিদিনই নানা কর্মসূচি পালন করছেন। জোট শরিকদের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়েছেন। এবার তাঁর পক্ষে প্রচারণায় নামাতে চান নাগরিক নেতাদের। প্রতীক পাওয়ার পর তাঁদের এলাকা ভাগ করে প্রচারণায় কাজে লাগাতে চান লিটন। দলীয় নেতা-কর্মীর পাশাপাশি শরিকদের নিজের পক্ষে রাখতে কাজ করছেন তিনি। প্রতিদিনই দলের নেতা-কর্মীদের বাইরে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। ইতোমধ্যে শরিক সংগঠন ১৪ দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করেছেন। পাশাপাশি রাজশাহীর পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের ভোটের মাঠে নিজের পক্ষে রাখতে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সব শ্রেণির মানুষের সাড়াও পাচ্ছেন তিনি। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, গত পাঁচ বছর উন্নয়নে রাজশাহীর আমূল পরিবর্তন করেছেন খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি উন্নয়নে পরীক্ষিত। রাজশাহীকে করেছেন দেশের পরিচ্ছন্ন নগরী। আগামীর যে মিশন কর্মসংস্থান, এটি বাস্তবায়ন করতে এ নগরে খায়রুজ্জামান লিটনকেই আবার দরকার। এটি সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি নাগরিক, পেশাজীবী সংগঠন ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও এবার লিটনের পক্ষে প্রকাশ্যে আসতে চাইছেন। খায়রুজ্জামান লিটনও তাঁদের সমর্থন নিতে নানাভাবে চেষ্টা করছেন। যদিও রাজশাহীর ভোটের মাঠে এখন পর্যন্ত মেয়র প্রার্থী হিসেবে মেয়র লিটন ছাড়া অন্য কারও তৎপরতা নেই, তাই বলে তিনি হাত গুটিয়ে বসে থাকছেন না। আগেভাগে দলের কোন্দল মিটিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি নাগরিক সমাজকে পাশে রাখার প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার খায়রুজ্জামান লিটন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।

তিনি রাজশাহীর উন্নয়নে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তাঁদের আগামী নির্বাচনে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে তিনি কৃষক লীগ, ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসব সভায় সবার কাছে রাজশাহীকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সহযোগিতার পাশাপাশি নির্বাচনে পাশে থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন। রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীকে বদলে দিয়ে উন্নয়ন দেখিয়ে দিয়েছেন।

গ্রিন সিটি ও ক্লিন সিটি রাজশাহী উপহার দিয়েছেন। এবার তিনি শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের তাগিদ দিয়েছেন। ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের বিকল্প নেই। রাজশাহীর সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটেছে। এবার প্রয়োজন রেল, নৌ ও বিমান যোগাযোগের উন্নতি। এ ক্ষেত্রে মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন আগামীতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবেন বলে আমরা আশাবাদী। আমরা ব্যবসায়ীরা এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে অতীতের মতো আগামীতেও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব।’ সভায় রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু বলেন, ‘খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীর উন্নয়ন দেখিয়ে দিয়েছেন। রাজশাহীকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাচ্ছেন। এবার তিনি কর্মসংস্থান দেবেন। শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাব।’ আরডিএ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফরিদ মামুদ হাসান বলেন, ‘বর্তমানে রাজশাহীর যে উন্নয়নের ধারা দেখছি, স্বাধীনতার পরে এমন উন্নয়ন আমরা দেখিনি। এখন রাজশাহীতে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য শাহ মখদুম বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হবে। কার্গো বিমান চালু করতে হবে। টেক্সটাইল, জুট মিল, সুগার মিলসহ বন্ধ থাকা কলকারখানা চালু করতে হবে। এগুলো চালু করতে আমরা সিটি মেয়রের সঙ্গে আছি।’

বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, রাজশাহীকে বদলে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেটি করে দেখিয়েছেন মেয়র লিটন। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে এখন যোগাযোগব্যবস্থা বাড়াতে হবে। সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। এবার ট্রেন, নৌ ও বিমান যোগাযোগব্যবস্থা বাড়াতে হবে। তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান বাড়বে। খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘রাজশাহীতে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আমি ভারতের মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান থেকে গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ হয়ে রাজশাহী হয়ে আরিচা হয়ে ঢাকা পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে নৌরুট চালুর কাজের অনেক দূর অগ্রগতি করতে পেরেছি। নৌপথ ও নৌবন্দর চালু করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এটি চালু হলে উভয় দেশে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করা যাবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।’ সিটি মেয়র বলেন, ‘রাজশাহীর বিমানবন্দরের উন্নয়ন ও কার্গো বিমান চালুর দাবি উঠেছে। ইতোমধ্যে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণে টেন্ডার হয়েছে। এ ছাড়া নগরীর কাঁচাবাজারগুলোর উন্নয়ন করা হবে। তিনটি কাঁচাবাজার নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করেছি। আরেকটি টেন্ডার হওয়ার অপেক্ষায় আছে। শিরোইল ও লক্ষ্মীপুর কাঁচাবাজারের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। মাংস ব্যবসায়ীদের জন্য আধুনিক স্লটার হাউস নির্মাণ করা হবে। কৃষিভিত্তিক শিল্পকারখানা গড়ে তোলার দাবি করেছেন অনেকে। আপনারা জানেন বিসিক শিল্পনগরী-২-এর কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে কৃষিভিত্তিক শিল্পকারখানা গড়ে তোলার চেষ্টা করব। আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন। তাহলে আমি অনেক কাজ করতে পারব।’ রাসিক মেয়র বলেন, ‘আগামীতে রাজশাহী সিটির সীমানা বর্ধিত করা হবে। সীমানা বৃদ্ধির প্রস্তাব ইতোমধ্যে দিয়েছি। আবার বিজয়ী হলে এসব কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।’

সর্বশেষ খবর