রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদন্ড পাওয়া দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ (উত্থাপিত হয়নি মর্মে) করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। এর ফলে দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। দুই আসামি হলেন- একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর।
বিচারপতি মো. জাফর আহমেদ ও মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেন। আইন অনুসারে রায়টি বিচারিক আদালত হয়ে কারাগারে যাবে। তবে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। ওই আবেদন খারিজ হলে মৃত্যুদন্ড কার্যকর হবে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম। ড. তাহেরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, নাহিদ সুলতানা যূথী, শাকিলা রওশন, তাহের কন্যা সাগুফতা তাবাসসুম ইসলাম প্রমুখ। ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাবির কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় নৃশংসভাবে হত্যার শিকার অধ্যাপক তাহেরের মৃতদেহ। ৩ ফেব্রুয়ারি নিহত অধ্যাপক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাত পরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন। দন্ডিতরা হলেন- একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, নিহত অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের সম্বন্ধি আবদুস সালাম। এরপর আসামিরা আপিল করেন। শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল দুই আসামির ফাঁসির দন্ডাদেশ বহাল এবং অন্য দুই আসামির দন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেন হাই কোর্ট। এরপর আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। পাশাপাশি যাবজ্জীবন দন্ডিত দুই আসামির দন্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিভাগের রায় বহাল রাখেন। ১৫ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হলে আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। গত ২ মার্চ আসামিদের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপরও একই ঘটনায় হাই কোর্টে রিট করা হলে তা খারিজ করা হয়।