২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সংবাদপত্রের ওপর শুল্ক প্রত্যাহার দাবি জানিয়েছে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। সংবাদপত্রের প্রধান কাঁচামাল নিউজপ্রিন্টের ওপর বর্তমানে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিতে হলেও এর সঙ্গে অতিরিক্ত হিসেবে মূল্য সংযোজন কর, এআইটি, এটি এবং ইন্স্যুরেন্স, ব্যাংক ও পরিবহন ব্যয়সহ ল্যান্ডেড কষ্ট প্রায় ৩০ শতাংশের বেশি চলে যাচ্ছে। বর্তমানে এই শিল্পের সংকটময় পরিস্থিতি চলছে, তাই এসব শুল্কের প্রত্যাহার সংবাদপত্র শিল্পের জন্য খুবই জরুরি বলে মনে করে নোয়াব। এনবিআরের সঙ্গে নোয়াব নেতৃবৃন্দের আলোচনা সভায় এ দাবি তুলে ধরা হয়। সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান নোয়াবের দাবি বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ স্বাক্ষরিত প্রস্তাবনায় গতকাল বলা হয়, বিশ্বায়ন ও ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে ছাপা সংবাদপত্র এমনিতেই রুগ্ন শিল্পে পরিণত হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে পত্রিকাগুলোর বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ায় বিজ্ঞাপন আয় দিয়ে উৎপাদন ব্যয়ের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। দেড় বছর আগেও যেখানে প্রতি টন বিদেশি নিউজপ্রিন্টের দাম ছিল ৫৭০ ডলার এবং বিনিময় হার ছিল ৮৫ টাকা, এখন সেখানে দাম ৭০০ ডলারের ওপর এবং বিনিময় হার ১০৯ টাকা। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এটাকে আরও ভয়ংকর সংকটের মুখে ফেলেছে।
আরও বলা হয়, সংবাদপত্র সেবা শিল্প হওয়া সত্ত্বেও একে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি, অনিবন্ধিত কোম্পানি ও নন-রেসিডেনসিয়াল ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে এবং করপোরেট ট্যাক্স ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। নোয়াবের পক্ষ থেকে সংবাদপত্রের করপোরেট ট্যাক্স ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করার দাবি জানায় নোয়াব।
এ ছাড়া সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন আয়ের ওপর টিডিএস ৪ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ এআইটিসহ মোট ৯ শতাংশ ধরা হয়; অথচ অধিকাংশ সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানের মোট আয়ের ৯ শতাংশ লভ্যাংশই থাকে না। তাই সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন আয়ের ওপর টিডিএস ৪ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ২ শতাংশ করা এবং উৎসস্থলে কাঁচামালের ওপর ৫ শতাংশ থেকে এআইটি শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানায় নোয়াব।
নোয়াব মনে করে, বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে সংবাদশিল্পকে বাঁচাতে সরকারি প্রণোদনার অংশবিশেষ এই শিল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া আবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটে সংবাদপত্র শিল্পকে সরকার ঘোষিত প্রণোদনার আওতায় আনাসহ এসব নানা বিষয় বিবেচনা করার বিশেষ অনুরোধ নোয়াবের।
