শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

গুদাম কারখানার বিষ ব্যবহারে সর্বনাশ

দুই শিশুর মৃত্যুতে কোম্পানির এমডি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাসাবাড়িতে পোকামাকড় নিধনের কাজে ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেড নামের কোম্পানি গুদাম, গার্মেন্ট, কলকারখানাসহ উন্মুক্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত কীটনাশক ব্যবহার করত। রাজধানীর ভাটারা এলাকার একটি বাসায় তারা এই বিষ ¯েপ্র করেছিল। কিন্তু কোম্পানির কর্মীরা ওই পরিবারকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি। একই সঙ্গে বাসাটিতে দেওয়া বিষ সঠিক অনুপাতে ছিল না। ফলে বিষক্রিয়ায় ওই দুই শিশুর মৃত্যু হয়। নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত এলাকা থেকে চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান ও এমডি ফরহাদুল আমিনকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এ বিষয়ে গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ঘটনার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও এমডি আত্মগোপন করেন। তারা গাড়িতে করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে থাকেন। গতকাল সকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। কীটনাশক বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, অ্যালুমিনিয়াম ফসফেট সমৃদ্ধ এই কীটনাশক বড় গার্মেন্ট, বীজ গুদাম ও বাণিজ্যিক স্থানে ব্যবহার করা হয়। এগুলো বাসাবাড়িতে ব্যবহার করা যায় না। আর ব্যবহার করলেও ৭২ থেকে ৯৬ ঘণ্টা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হয়। ভাটারার ওই বাসাটিতে ব্যবহৃত পোকামাকড় নাশক রাসায়নিক বিষ সঠিক অনুপাতে ছিল না। ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে এই কীটনাশক কীভাবে কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, এর অনুমোদন ছিল কি না, এর রাসায়নিক অনুপাত সঠিক ছিল কি না, মানবদেহের জন্য এগুলো কতটা ক্ষতিকর, এ বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, তীব্র দাবদাহের সময়ে কীটনাশক মানব জীবনের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে পেস্টিসাইড কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিষয়টি উপলব্ধি করা দরকার ছিল। কিন্তু অর্থের লোভে তারা স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি উপলব্ধি না করে এবং পরিবারের সদস্যদের যথাযথ নিরাপত্তাব্যবস্থার উপদেশ না দিয়েই আনাড়ি কর্মচারীদের দিয়ে কীটনাশক প্রয়োগ করে। যার ফলশ্রুতিতে দুটি শিশু-কিশোরের জীবন ঝরে যায়। অসুস্থ হন পরিবারের অন্য সদস্যরাও।

গত রবিবার ভাটারা এলাকার একটি বাসায় বিষক্রিয়ায় শায়েন মোবারত জাহিন (১৫) ও শাহিল মোবারত জায়ান (৯) নামে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়। অসুস্থ হন তাদের মা শারমিন জাহান লিমা ও বাবা মোবারক হোসেন। পরে এ ঘটনায় মোবারক হোসেন বাদী হয়ে ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন। ওই দিন প্রতিষ্ঠানের কর্মী টিটু মোল্লাকে গ্রেফতার করে ভাটারা থানা পুলিশ।

সর্বশেষ খবর