সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দিল নির্বাচন কমিশন। আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে সোমবার প্রায় অর্ধশত নাগরিকের হাতে ‘প্রতীকী’ স্মার্টকার্ড বিতরণ করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান। এ সময় নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ জাহাংগীর আলম, রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানা শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে স্মার্ট দেওয়া হবে।
‘প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ‘সোমবার আবুধাবিতে স্মার্টকার্ড দিয়েছি ও বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটে মোট শখানেক নাগরিকের হাতে প্রতীকী স্মার্টকার্ড তুলে দিচ্ছি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাতে স্মার্টকার্ড বিতরণের এ কার্যক্রম মাইলফলক হয়ে থাকবে।’ ইসি আহসান হাবিব খান বলেন, দেশপ্রেমে নিবেদিত প্রবাসে অবস্থিত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের এনআইডি নিয়ে ভোগান্তি লাঘবের কথা চিন্তা করেই নির্বাচন কমিশনের এ প্রচেষ্টা। তিনি আরও বলেন, সফলতার সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এনআইডি কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরবর্তীতে আগামীতে আরও ৪০টি দেশে প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম অচিরেই শুরু হবে।
এদিকে স্মার্টকার্ড হাতে পাওয়ার এ প্রক্রিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা দূতাবাসের ভূমিকার প্রশংসা করেন। এখন থেকে ১৫ বছর আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন শুরুর সময়ই প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করা ও এনআইডি দেওয়ার দাবি ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা পেরিয়ে কে এম নূরুল হুদা কমিশন ২০১৯ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় অনলাইন নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু এরপর মহামারিতে সে উদ্যোগ থমকে যায়। কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন আবার সেই কাজে গতি আনার উদ্যোগ নেয়। নানা জটিলতা পার হয়ে প্রবাসে বাংলাদেশিদের এনআইডি সেবা দিতে নিবন্ধন কাজ শুরুর সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হলো। পর্যায়ক্রমে এক বছরের মধ্যে অন্তত ১৫টি দেশে এ সেবা চালুর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত এনআইডি পেতে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, মালদ্বীপে থাকা ৫ হাজারের বেশি প্রবাসী নাগরিক আবেদন করেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে সহস্রাধিক আবেদন হলেও বাংলাদেশে যাচাই করা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজ শুরু হলেও অন্তত দুই কারণে স্মার্টকার্ড পেতে ধীরগতি হতে পারে। কারণ আমিরাতে চট্টগ্রামের মানুষ বেশি থাকে। তারা বিশেষ এলাকাভুক্ত হওয়ায় স্থানীয়ভাবে যাচাই-বাছাইয়ে বেশ সময় লাগে। এ বছরের শেষে নির্বাচন থাকায় নির্বাচন কর্মকর্তা এ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। ইসির লোকবলের অভাবে স্থানীয় পর্যায়ে নিবন্ধন আবেদনের যাচাই-বাছাইয়ে বেগ পেতে হয়। সে ক্ষেত্রে সংসদ নির্বাচনের পর ২০২৪ সালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রমে গতি আসবে।