জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক, চিন্তাবিদ ও গবেষক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, শিক্ষা নিয়ে যে কোনো পদ্ধতি বাস্তবায়ন করার আগে দেশে শিক্ষা অবকাঠামো কেমন আছে, শিক্ষক শিক্ষার্থী অনুপাত কেমন, যথাযথ শিক্ষক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা রয়েছে কিনা- সে বিষয়গুলো ভেবে দেখা প্রয়োজন। আমাদের বেশির ভাগ স্কুলে গবেষণাগার বা ল্যাবরেটরি নেই। অনেক স্কুলে লাইব্রেরি নেই। স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের অনেক পদ শূন্য। এসব সমস্যা বিদ্যমান রেখে কোনো শিক্ষাব্যবস্থাই যথাযথভাবে কাজ করবে না। তাই নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করার মতো পরিস্থিতি নেই। শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। এই চিন্তাবিদ বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমে বেশ কিছু ভালো বিষয় রয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিজ্ঞতাভিত্তিক বিভিন্ন কাজ করা, জীবন-জীবিকা, শিল্প সংস্কৃতি শেখানো- এগুলো ভালো বিষয় বলে মনে করি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে- নতুন কোনো পদ্ধতি চালু করতে হলে পুরনো পদ্ধতির পর্যালোচনা করতে হয় যে আগের পদ্ধতি কেন কাজ করেনি। দেশে সব সরকারের আমলেই শিক্ষানীতি হয়েছে, তবে কোনো শিক্ষানীতিই বাস্তবায়ন হয়নি। এ সরকার সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছিল, বলা হয়েছিল এই ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল হবে, তাদের কোচিং, নোট-গাইডমুখী হওয়ার প্রবণতা বন্ধ হবে। কিন্তু দেখা গেল, যথাযথ গবেষণা, শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাবে এ পদ্ধতি কাজ করেনি। বরং সৃজনশীল পদ্ধতিতে কোচিং আর নোট-গাইড নির্ভরতা বেড়েছে। তিনি বলেন, সরকার বলছে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম কার্যকর হবে। এই কারিকুলাম কার্যকর করার জন্য শিক্ষক শিক্ষার্থী অনুপাত সর্বোচ্চ ১:৩০ হতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে এক শিক্ষকের বিপরীতে কোনো কোনো স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৮০, ৯০ বা তারও বেশি। এটা বড় সমস্যা। ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আদর্শমানের বেশি হলে এ কারিকুলাম কার্যকর হবে না। এ ছাড়া কারিকুলামে বিজ্ঞান শিক্ষা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি বিপজ্জনক কাজ হয়েছে। প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের সনদ নেওয়ার ব্যবস্থা করা শিক্ষার্থীদের একদিকে চাপ বাড়াবে অন্যদিকে শিক্ষাব্যয় বাড়াবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে শহরের অভিভাবকদের আর্থিক সামর্থ্য আর সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে গ্রামের অভিভাবকদের সামঞ্জস্য হবে না। এ ছাড়া গ্রামাঞ্চলে বহু বিদ্যালয় আছে যেগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন এলাকার ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা। নতুন কারিকুলামে শ্রেণিকক্ষে যে নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সেখানে গ্রামাঞ্চলে স্কুলের শিক্ষকরা কীভাবে প্রভাবশালীদের সন্তানদের স্বাধীনভাবে নম্বর দেওয়ার সাহস দেখাবেন? সেখানে ছাত্র-ছাত্রীর যোগ্যতা, দক্ষতা, উপস্থাপনা ইত্যাদি কোনোভাবেই কাজ করবে না। তাই তারা যোগ্যতা অনুযায়ী নম্বরও পাবে না। আনু মুহাম্মদ বলেন, কারিকুলাম নিয়ে কেউ সমালোচনা করলেই তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা, তাকে গ্রেফতার করা এগুলো বন্ধ করে সরকারের উচিত বিষয়টি নিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচনা-পর্যালোচনা করা। নতুন কারিকুলামের এমন সংশোধন, পুনর্বিন্যাস করা প্রয়োজন যেন তা কার্যকর করা যায়। আর এর আগে অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত কমিয়ে আনা, শিক্ষক শূন্যতা সমস্যার সমাধান করতে হবে।
শিরোনাম
- ফের ভেনেজুয়েলার কথিত ‘মাদকবাহী’ নৌযানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
- খুলনায় ১০৩ কেজি হরিণের মাংসসহ একজন আটক
- তিন ট্রিলিয়ন ডলারের ক্লাবে অ্যালফাবেট
- একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (১৬ সেপ্টেম্বর)
- লড়াই করলো হংকং, কষ্টার্জিত জয় পেল শ্রীলঙ্কা
- ডাকসুর ভোট ম্যানুয়ালি গণনার জন্য লিখিত আবেদন উমামার
- বঙ্গোপসাগরে নৌবাহিনীর অভিযানে ১১ পাচারকারী আটক
- ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত
- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন
- গোপালগঞ্জে ভুয়া ডাক্তার আটক, ৩ মাসের কারাদণ্ড
- চমেক হাসপাতালে একসঙ্গে ৪ শিশুর জন্ম
- বিয়ের প্রলোভনে তরুণীদের চীনে পাচারের চেষ্টা, চীনা নাগরিকসহ আটক ২
- টাঙ্গাইলে যৌনপল্লী থেকে যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
- হামাস নেতাদের ওপর আরও হামলার ইঙ্গিত নেতানিয়াহুর
- জাকসু নির্বাচনে নানা অনিয়মের তদন্ত চায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক
- তিন মাসে কোটিপতি বেড়েছে ৬ হাজার
- গাজামুখী ত্রাণবহরে যোগ দিচ্ছে গ্রিসের দুই জাহাজ
- জাতীয় নির্বাচনে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা দেখাতে পুলিশের প্রতি আহ্বান ডিএমপি কমিশনারের
- আসাদুজ্জামান নূরের ফ্ল্যাট-জমি জব্দ, অবরুদ্ধ ব্যাংক হিসাব
- ৩ জেলার ডিসিকে প্রত্যাহার