প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছোটদের সুন্দর জীবন নিশ্চিত করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য। আজকের ছোট শিশুরাই হবে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশের কারিগর। গতকাল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিমাডাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন এবং ‘এসো বঙ্গবন্ধুকে জানি শীর্ষক’ অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন শেষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলেবেলার বিদ্যালয়ে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা তাঁকে স্বাগত জানায়। গোপালগঞ্জ সফরের দ্বিতীয় দিন গতকাল টুঙ্গিপাড়া মাল্টিপারপাস পৌর সুপার মার্কেট পরিদর্শন এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব। শিশুরাই হবে আসল স্মার্ট, তারাই দেশ চালাবে। আমরা একসময় চাঁদেও যাব। সেভাবেই সবাইকে এখন থেকে প্রস্তুত হতে হবে। এ জন্য পড়াশোনা করতে হবে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোটবেলা থেকেই মানুষের জন্য আলাদা একটা দরদ ছিল। অন্নহীন, ছিন্ন কাপড় পরিহিত মানুষ, থাকার জায়গা নেই, এই জিনিসগুলো তাঁকে খুব ব্যথিত করত। সেজন্য ছোটবেলা থেকেই তিনি মানুষের জন্যই কাজ করতেন। নিজের জীবনের কোনো সুখ, সুবিধা কিছুই দেখেননি। শুধু একটাই চিন্তা ছিল- এ দেশের মানুষকে কীভাবে দারিদ্রের হাত থেকে মুক্তি দেবেন। কীভাবে একটা উন্নত জীবন দেবেন এবং ছোট্ট শিশুরা যাতে একটা সুন্দর জীবন পেতে পারে সেটাই তাঁর লক্ষ্য ছিল।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমি মনে করি আজ যে উদ্যোগ এখানে নেওয়া হয়েছে অথবা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যেসব শিশু, তাদের আঁকা ছবি দিয়ে অ্যালবাম করা বা ছবির মাধ্যমে ইতিহাসকে যে তুলে ধরা- আসলে ছবি তো কথা বলে এবং এর মাধ্যমে শিশুদের ইতিহাস জানার সুযোগ হচ্ছে। ’৭৫ পরবর্তীতে এ দেশের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে, এটাই দুর্ভাগ্য। দেশের মানুষের জানা উচিত কীভাবে স্বাধীনতা এলো। তিনি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের মাঝ থেকেই বের হয়ে আসবে আমার মতো প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, তোমরা বড় বড় জায়গায় যাবে, গবেষণা করবে, বিজ্ঞানী হবে। আর আমরা একসময় চাঁদেও যাব, কোনো চিন্তা নেই। কাজেই সবাইকে এখন থেকে সেভাবে প্রস্ততি নিতে হবে, পড়াশোনা করতে হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর চাচা শেখ কবির হোসেন, শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, শেখ সারহান নাসের তন্ময়, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকার প্রতিনিধি সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম, গোপালগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শেখ রকিব হোসেন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের প্রমুখ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত এ স্কুলের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন ও তাদের খোঁজ খবর নেন। তিনি সেখানে সময় কাটান। বঙ্গবন্ধু কর্নার ঘুরে ঘুরে দেখেন। তার পর খুদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তোলেন ছবি। এ স্কুলেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে ফাতেহাপাঠ ও বিশেষ দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন। এ ছাড়া দাদা শেখ লুৎফর রহমান ও দাদি শেখ সায়েরা খাতুনের কবরে দোয়া-মোনাজাত করেন তিনি।