নাজমুল হাসান পাপন যুগের অবসান হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি)। ২০১২ সালে বিসিবির সভাপতি হন পাপন। এরপর টানা ১২ বছর সভাপতি ছিলেন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে আত্মগোপনে বিসিবির সাবেক সভাপতি পাপন। বাদ পড়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রালয়ের মন্ত্রী থেকেও। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবির সভাপতি থেকে পদত্যাগ করেছেন। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ। বিসিবির ১৫তম সভাপতি ফারুক আহমেদ। এর আগে ২০১৬ সালে প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন বিসিবির দ্বিস্তরের নির্বাচক কমিটি, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, সীমাহীন দুর্নীতির প্রতিবাদ করে। পাপন যুগের অবসানের পর দায়িত্ব নিয়ে গতকাল মিডিয়ার মুখোমুখি হন। সেখানে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নই প্রধান লক্ষ্য বলেন বিসিবির নতুন সভাপতি, ‘লক্ষ্য তো অনেক বড়। প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য বাংলাদেশ দলকে একটা জায়গায় দেখতে চাই। অনেক জায়গায় আমাদের কাজ করতে হবে। আপনারা জানেন যে, অনেক দিন ধরে কাজ হয়েছে, হয় নাই। অনেক প্রশ্ন আছে। আমি মনে করি আমার প্রথম ও প্রধানতম দায়িত্ব ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এটা যদি আমরা মাথায় রাখি... বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দল... তাহলে কাজগুলো অনেক সহজ হবে। আমরা যেন অন্যদিকে ডাইভার্ট হয়ে না যাই। সো ক্রিকেট টিম, বাংলাদেশ ক্রিকেট সার্বিকভাবে এবং বাংলাদেশ.. আমরা এটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’ ফারুক সভাপতি এবং নাজমুল আবেদীন ফাহিম পরিচালক হিসেবে গতকাল দায়িত্ব নিয়েছেন।
নব্বই দশকের ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিচিত মুখ ফারুক। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন। ক্যারিয়ারে ৭টি ওয়ানডে খেলেছেন। ১৫ গড়ে ১০৫ রান করেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ১৯৮৮ সালে এশিয়া কাপে, চট্টগ্রামে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেন ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চেস্টারলিতে। সর্বোচ্চ রান ৫৭, ভারতের বিপক্ষে চ-ীগড়ে। দুই দফায় নির্বাচক প্যানেলের প্রধান ছিলেন ফারুক আহমেদ। ২০০৩ সালে প্রথম দফায় নির্বাচক থাকাকালীন জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করেন মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে। পাপন সভাপতি থাকাকালীন দ্বিতীয়বার দায়িত্ব নেন ২০১৩ সালে। তিনি নির্বাচক থাকাকালীন ২০১৫ সালে বাংলাদেশ প্রথমবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। যা বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এরপর পদত্যাগ করেন ২০১৬ সালে। স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে পদত্যাগ করা ফারুক এখন বিসিবির সভাপতি।