প্রাণ বাঁচাতে দলে দলে অনুপ্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। নতুন করে ৮ থেকে ১২ হাজার রোহিঙ্গা নৌকায় করে নাফ নদ পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। তাদের সহায়তা করছে টেকনাফের স্থানীয় দালাল চক্র। এ চক্র রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
মংডু থেকে দালালদের সহায়তায় টেকনাফে আসা সলিম উল্লাহ বলেন, রাখাইনে আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যেই তীব্র যুদ্ধ চলছে। তারা রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছে। গ্রামের অনেক রোহিঙ্গাকে তারা হত্যা করেছে। মর্টারশেল ও বিমান হামলা চালিয়ে অনেক গ্রাম তারা জ্বালিয়ে দিয়েছে। তাই রাখাইনে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে নৌকা করে নাফ নদ পার হয়ে টেকনাফের বড়ইতলী দিয়ে রাতের আঁধারে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। এ কাজে স্থানীয় লোকজন জনপ্রতি ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা করে নিয়েছে।
মংডু থেকে পালিয়ে আসা আরেকজন দোস মোহাম্মদ বলেন, মংডু শহরের গ্রামে যখন হামলা করেছে আরাকান আর্মি, তখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে এক সপ্তাহ সীমান্তের কাছে পাহাড়ে অবস্থা করেছি। আরও শতশত মানুষ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে ছিল। পরে ক্যাম্পে পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা স্থানীয় লোকদের সহায়তা নিলে টাকার বিনিময়ে নাফ নদ পার হয়ে টেকনাফের হ্নীলা দমদমিয়া সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ঢুকে পড়েছি। এখনো মিয়ানমারের সীমান্তে হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছেন।
সীমান্তের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের রাখাইন দখল নিতে আরাকান আর্মি দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে। আরাকান আর্মি ছয় মাস যুদ্ধে রাখাইনের অধিকাংশ অঞ্চল ও দেশটির সেনা ও বিজিপির ক্যাম্প, চৌকি দখলের পরে মংডু শহর দখল নিতে এখন তীব্র হামলা চালাচ্ছে। অন্যদিকে সরকারি বাহিনীও মংডু শহর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পাল্টা হামলা অব্যাহত রেখেছে। এ সংঘাতের জেরে মংডুসহ আশপাশের গ্রামে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের প্রাণহানি ঘটছে।