তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে করা পৃথক দুই রিট আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। গতকাল বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানি সমাপ্ত ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের জন্য আজকের কার্যতালিকায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালত। পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে দ্বাদশতম দিনের শুনানিতে গতকাল মোফাজ্জল হোসেন নামে এক ব্যক্তির করা রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও আইনজীবী শাহরিয়ার কবির। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদ উদ্দিন ও তানীম খান। শুনানি শেষে আইনজীবীরা রায়টি সুপ্রিম কোর্টের শীতকালীন অবকাশের আগে (১৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু) দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বলেন, আমরা এই মামলায় অনেক সময় নিয়েছি। ফ্লাট গেট ওপেন করে দিয়েছি। অনেকের বক্তব্য শুনেছি। আমরা এমন একটি রায় দিতে চাই, যেটা নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন না ওঠে। আমরা চাই ন্যায়বিচার করতে। তিনি আরও বলেন, ন্যায়বিচার শব্দ দুটি আমার অনেক পছন্দের। আমি এই শব্দ দুটিকে অনেক উচ্চতায় মনে করি। অন্য কেউ অন্যভাবে নিতে পারেন। তবে আমি এই শব্দ দুটি ভালোবাসি। তিনি বলেন, ন্যায়বিচার করতে চাই। এ জন্য আমাদের যথাযথ সময় দিতে হবে। আমরা রায়ের ডেট জানানোর জন্য একটা দিন নিচ্ছি। আগামীকাল (আজ) আমরা রায়ের তারিখ জানিয়ে দেব।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট গত ১৯ আগস্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই বিষয়ে আরও একটি রিট করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন নামে এক ব্যক্তি। দুটি রিটের শুনানি একসঙ্গে গ্রহণ করেছেন আদালত। রুলে ইন্টারভেনার হিসেবে বিএনপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিসহ বেশ কয়েকজন যুক্ত হন। এর মধ্যে শুনানিতে রিট আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী, বিএনপির আইনজীবী, রাষ্ট্রপক্ষ ও জামায়াতের আইনজীবী বক্তব্য তুলে ধরেছেন। রুলের ওপর গত ৩০ অক্টোবর থেকে গতকাল ১২তম দিন শুনানি হয়।