জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেছেন, বিদ্যমান ফ্যাসিস্ট গঠনতন্ত্র ও সিন্ডিকেটের অধীনে ডাকসুতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ডাকসুর গঠনতন্ত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে, যার সমাধান প্রয়োজন। যেমন এই গঠনতন্ত্রে উপাচার্যের রয়েছে অসীম ক্ষমতা। তা ছাড়া ভোটার এবং প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতাগুলোও নতুন করে বিবেচনা করা প্রয়োজন। ২০১৯ সালে ছাত্রলীগের প্রেসক্রিপশনে যেসব সংশোধনী আনা হয়েছিল, সেগুলো পুনরায় সংশোধন করতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। নাছির উদ্দীন বলেন, ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন করার এখতিয়ার সিন্ডিকেটের। সিন্ডিকেটে সব ফ্যাসিস্টপন্থি শিক্ষক। আগে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সিন্ডিকেট পুনর্গঠন করতে হবে, এরপর ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে হবে।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেট সদস্য সীতেশ চন্দ্র বাছার, রামেন্দু মজুমদার, বাহালুল মজনুন চুন্নু, নিজামুল হক ভূঁইয়া, মোহাম্মদ শরিফ উল ইসলাম, মাহিন মোহিদ, আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান, আবদুছ ছামাদ- এরা সবাই ফ্যাসিস্ট। তাদের সিনেটে রেখে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন করা যাবে না।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে, হল প্রশাসনের কোনো পর্যায়ে ফ্যাসিস্ট অর্থাৎ নীল দলের সমর্থক কোনো শিক্ষককে দায়িত্বে রাখা হবে না, এটা নিশ্চিত করতে হবে। বিগত নির্বাচনে নীল দলের শিক্ষকরা ব্যালটবাক্স ভর্তি, ডামি লাইন, ভোট গণনায় জালিয়াতি, বিরোধীমতের সংগঠনগুলোকে প্রচারণা করতে না দেওয়ার মতো কলঙ্কিত কর্মকান্ড করেছেন। তাদের অপসারণ করা ছাড়া সুষ্ঠু ডাকসু নির্বাচন সম্ভব নয়। ‘ছাত্রদল ডাকসু নির্বাচন বিলম্ব করতে চাইছে’- এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুত ডাকসুসহ সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে। কোনো দলীয় সংগঠন ডাকসুর বিকল্প হতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২০১০ সাল থেকে আজকে পর্যন্ত ক্যাম্পাসে কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারিনি। ছাত্রলীগ পরিকল্পিতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের একটা দূরত্ব তৈরি করে রেখেছিল, যাতে যারা স্বৈরাচারবিরোধী অবস্থান নিয়েছে তারা সংগঠিত হতে না পারে। সুতরাং ডাকসুর আগে আমাদের একটা যৌক্তিক সময় পর্যন্ত ক্যাম্পাসে স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দিতে হবে। ন্যাচারাল জাস্টিস অনুসারেও এই সুযোগ পাওয়া আমাদের ন্যায্য দাবি।’ ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে আমাদের হলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, এখনো ছাত্রদলের কর্মীদের হলে সিট দেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন প্রসিডিওরাল এক্সকিউজ দেখিয়ে ছাত্রদলের কর্মীদের সিট থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা গোপনে ও প্রকাশ্যে হলে আধিপত্য বিস্তার করছে। অনেকে তথাকথিত ছাত্রপ্রতিনিধি হয়ে হলে প্রভাব বিস্তার করছে। পদধারী এবং তথাকথিত পদত্যাগী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসতে হবে। তাদের কোনো ফোরামে পুনর্বাসন করা যাবে না। তারা অবাধে বিচরণ করলে নির্বাচনে সহিংসতা ঘটানোর চেষ্টা করবে।’