জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ-সংক্রান্ত জটিলতা কাটছে। ‘সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়ায় মঙ্গলবার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংশোধিত অধ্যাদেশের গেজেট পেলে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ কাজ দ্রুত শুরু করবে নির্বাচন কমিশন।
জাতীয় সংসদের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে কুমিল্লা, গাইবান্ধা, পিরোজপুর, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার কিছু আসন নিয়ে বেশি আবেদন এসেছে। বিগত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ১০ আসনে পরিবর্তন আনা হলেও অধিকাংশ আসনে এখনো জটিলতা রয়েই গেছে। এক্ষেত্রে সংশোধিত অধ্যাদেশের গেজেট হাতে পেলে নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে আসন-সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে গতকাল নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আমরা আইন সংশোধনের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছিলাম। মঙ্গলবার উপদেষ্টা পরিষদে তা অনুমোদন হয়েছে। এখন সেই গেজেট পেলেই আমরা কাজ শুরু করব। এক্ষেত্রে সীমানা পুনর্নির্ধারণে আইনে যেসব পন্থা আছে সেগুলোই অনুসরণ করা হবে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে কমিশনের কাছে ৬১টি আসন থেকে এ পর্যন্ত ৪০৫টি আবেদন জমা পড়েছে। অধ্যাদেশের গেজেট পেলে তা কমিশনে উপস্থাপন করা হবে এবং দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। এর আগে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (তৃতীয় কমিশন সভা শেষে) ৩০ জানুয়ারি বলেছিলেন, মানুষের মধ্যে শহরমুখী প্রবণতা রয়েছে। জনসংখ্যা ভিত্তি ধরলে শহরের দিকে আসন বাড়বে, অন্য এলাকায় কমবে। কমিশন মনে করে, এতে সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয় না। নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণে এ কমিশনের ভাষ্য, আমরা সীমানা নির্ধারণ করতে চাচ্ছি ভৌগোলিক আয়তন, অবস্থান ও সর্বশেষ জনশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে।
২০০৮-২০২৩ সালের সীমানা নির্ধারণে বিতর্কের বিষয়টিও তুলে ধরে ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ভবিষ্যতে স্বাধীন সীমানা নির্ধারণ কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে। সংস্কার কমিশন বলেছে, ২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিশেষ কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যাপকভিত্তিক সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ করা হয় ২০০৮ সালে। এ সময় জাতিসংঘের সহায়তায় একজন আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারণ বিশেষজ্ঞকে নিয়োগ দিয়ে একটি গবেষণা করা হয়, যদিও ওই গবেষণার সব পরামর্শ গ্রহণ করা হয়নি। এদিকে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, সীমানা নির্ধারণে আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়ে ঐকমত্য হলে কী করা হবে- দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সচিব বলেন, ‘যদি’র ওপরে কোনো কিছু বলার সুযোগ আমার নেই। যদি এটা হয় তাহলে ওটা হবে, আমার কাছে যা বাস্তব আমি তা নিয়েই বলছি। ‘যদি হয়’ তাহলে তখন সেই যদি অনুযায়ী যদি হবে।’