আগামী পাঁচ বছরে জাপানের কর্মী প্রয়োজন হবে অন্তত ৮২ লাখ। ক্রমবর্ধমান শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত ১ লাখ কর্মী নিয়োগের কথা জানিয়েছে জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা। এ ব্যাপারে গতকাল জাপানের টোকিওতে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
নিক্কেই ফোরামে অংশ নিতে চার দিনের সফরে জাপানে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। গতকাল ফোরামে অংশগ্রহণের পাশাপানি টোকিওতে ‘বাংলাদেশ সেমিনার অন হিউম্যান রিসোর্সেস’ শীর্ষক এক সেমিনারে অংশ নেন তিনি। সেমিনারে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জাপানে বাংলাদেশিদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে। এটি শুধু কাজ করার জন্য নয়, বরং জাপানকে জানার দ্বারও উন্মোচন করবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য। বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ, যার অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচে। সরকারের কাজ হলো তাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া।
সেখানে জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (এনবিসিসি) চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, আমাদের ফেডারেশন তরুণ ও দক্ষ শ্রমিকের জন্য বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় উৎস হিসেবে দেখছে। তারা উভয় দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে। আগামী পাঁচ বছরে আমরা ১ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিককে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।
সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টা দুটি সমঝোতা স্মারকের সাক্ষী হন। প্রথমটি বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) ও কাইকম ড্রিম স্ট্রিট (কেডিএস)-এর মধ্যে, যার একটি জাপান-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগ; দ্বিতীয়টি বিএমইটি ও জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (এনবিসিসি) এবং জেবিবিআরএ (জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি)-এর মধ্যে।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, জাপানে অনেক কর্মী সংকট। আগামী পাঁচ বছরে তাদের ৮২ লাখ কর্মী লাগবে। ২০৪০ পর্যন্ত লাগবে ১ কোটি ১০ লাখ। আগে জাপানে ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে মানুষ আসত। অর্থনীতি ভালো হওয়ায় ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনাম থেকে কর্মী আসছে না। সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে মিয়ানমার থেকে অনেকে আসতে পারছে না। নেপাল থেকে কিছু মানুষ যাচ্ছে। জাপানিরা বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আছে। আমাদের মূল সমস্যা জাপানি ভাষা শিক্ষা। ভাষা ও কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে জাপানের শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের দখলে থাকবে। অধ্যাপক ইউনূস এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন।