‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’-কে ‘কালো আইন’ আখ্যায়িত করে ওই অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা। ঈদের পর কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা। এরআগে গতকাল সকালে সচিবালয়ের বাদামতলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা অংশ নেন। সমাবেশে সরকারের উদ্দেশে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আপনারা যদি ভেবে থাকেন আন্দোলন থেমে গেছে, তাহলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন।
আমরা এমন কর্মসূচি দেব, আপনারা কল্পনা করতে পারবেন না। ঈদ সামনে তাই বুধবার কর্মসূচি রাখিনি। যদি এ আইন বাতিল না করা হয়, তাহলে প্রয়োজনে শুধু কর্মবিরতি নয়, অবস্থান কর্মসূচিও দিতে পারি। দরকার হলে সারা দেশে ডিসি অফিস, বিভাগীয়সহ সমগ্র বাংলাদেশে এ কর্মসূচি ছড়িয়ে দেব। ১৫ জুনের মধ্যে ভালো সংবাদ না পেলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
ঐক্য ফোরামের অপর কো-চেয়ারম্যান বাদীউল কবীর বলেন, এ অধ্যাদেশ যত দিন ছিল না তাতে কর্মপরিবেশের কী ক্ষতি হয়েছে? আর এটি প্রবর্তন হওয়ার ফলে কী লাভ হয়েছে? এ আইন করার ফলে সবার কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে কর্মসূচি থাকবে না। ১৬ জুন আপনারা সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন। কেউ যেন কর্মস্থলে না থাকেন, সবাই বেলা ১১টায় সচিবালয়ের বাদামতলা একত্র হয়ে উচ্চারণ করব, ‘অবৈধ কালো আইন বাতিল কর, করতে হবে। মানি না মানব না।’
সমাবেশে ঐক্য ফোরামের কো-মহাসচিব নজরুল ইসলামসহ আরও অনেক নেতা সমাবেশে বক্তব্য দেন। বক্তব্যের পর কর্মচারীরা বিক্ষোভ করে নতুন ভবনের নিচে অবস্থান নেন। পরে আইন ও অর্থ উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। তারা জানান, অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানিয়ে তিন দিনে সরকারের সাতজন উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন কর্মচারীরা।
জানা যায়, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়ে চাকরিচ্যুত করার বিধান রেখে গত ২৫ মে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করা হয়। গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন হয়। ২৪ মে থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আসছে।