চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ‘গুরুতর’ অভিযোগ এনেছেন। প্রকাশ্যে এক সভায় তিনি বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা প্রকল্পের ফাইল দেখলে সেটা মন্ত্রণালয়ে থেকে বাসায় নিয়ে যান, এরপর সেটা আর ফেরত আসে না। এভাবে মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল গায়েব হয়ে যায়।’ গতকাল নগরীর জামালখানে চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ) ক্যাম্পাসে ‘পরিচ্ছন্নতা সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়বকে সামনে রেখে চসিক মেয়র বলেন, ‘আমাদের তিনটি প্রজেক্ট এখনো এলজিআরডি মিনিস্ট্রিতে আছে। অ্যাডভাইজার সাহেব যখন দেখেন যে, এটা একটা প্রজেক্ট, তখন উনি ফাইলটা আর মিনিস্ট্রিতে রাখেন না, উনি সেটা ঘরে নিয়ে চলে যান। দিজ ইজ দ্য প্যাথেটিক সিনারিও, দ্যাট উই আর ফেসিং নাও আডেইজ। ফাইল আছে, সব আছে, কিন্তু খুব চমৎকারভাবে উনারা বাসায় নিয়ে চলে যান, মিনিস্ট্রি থেকে ফাইল গায়েব হয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমার গত ১১ মাসের অভিজ্ঞতার কথা বলছি। ফাইল আর মিনিস্ট্রিতে পাওয়া যায় না। আমি খুঁজতে খুঁজতে মিনিস্ট্রিতে, কীরে আমার ফাইল কই, বলে- ফাইল তো বাসায় নিয়ে গেছে। এখন বাসায় নেওয়ার পরে সেটা আর সিগনেচার হয় না। ওটা আর আসে না।’ মন্ত্রণালয়ের ‘অসহযোগিতার’ কারণে কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে ইঙ্গিত দিয়ে মেয়র বলেন, ‘ইউকের প্রজেক্টটা আমি আর করতে পারিনি। জাপান অ্যাজ ওয়েল অ্যাজ কোরিয়ার প্রজেক্টও। আজ এগুলো যদি আমি অনেক দ্রুত পেতাম, তাহলে চট্টগ্রাম শহর অনেক সুন্দর করে দিতে পারতাম।’
বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এটা শুধু চট্টগ্রাম সিটির ব্যর্থতা নয়, এটা রাষ্ট্রের ও সরকারের ব্যর্থতা। ৪০০ কোটি টাকার আমার যে ইন্সট্রুমেন্টের প্রজেক্ট, সেটা ফিন্যান্স মিনিস্ট্রিতে গিয়ে হয়ে গেল ২৯৮ কোটি টাকা। প্রায় ১০০ কোটি টাকা কেটে দিল। কেটে দিয়ে সেখানে বলে দিল, আমাদের ১৬০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে ৫ শতাংশ সুদে। আমরা একটা সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। শুধু ৬০ কোটি টাকা তারা আমাকে বরাদ্দ দেবে। বাকিটা সিটি করপোরেশন থেকে দিতে হবে।’
চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এম নুরুল আবসারের সভাপতিত্বে ও সহকারী রেজিস্ট্রার রুমা দাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সৈয়দ মাহমুদুল হক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুল করিম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এবং দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।