চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের লক্ষ্যে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন প্রার্থীরা। এতে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল দিয়েছে আট দফায় মোট ৬৯টি আর ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ঘোষণা করেছে ৩৩ দফা সংস্কার পরিকল্পনা।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এই ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় তাদের আট দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন।
শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে আট দফা ইশতেহারে ৬৯টি সংস্কারের কথা বলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল সাজ্জাদ-শাফায়েত-তৌফিক পরিষদ। ইশতেহারে আধুনিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলা; মানসম্মত খাদ্য ও আবাসনের অধিকার নিশ্চিত করা; শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও আইনি সহায়তা; নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস ও নারী স্বাস্থ্য সুরক্ষা; পরিবহন ব্যবস্থার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণ; মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করা; সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও বিনোদনমূলক কার্যক্রম সমৃদ্ধকরণ এবং ক্যারিয়ার গঠনে দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। এর আগে ২টায় শিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহীম রনি তাদের সংস্কার পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। ১২ মাসে ৩৩ দফা সংস্কার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির মনোনীত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। ইশতেহারের মধ্যে ৯টি ফোকাস পয়েন্টে রেখেছে প্যানেলটি। ফোকাস পয়েন্টগুলো হলো-আবাসন, যাতায়াত, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, নিরাপদ ও গ্রিন ক্যাম্পাস, সেশনজট, অটোমেশন, শিক্ষা গবেষণা ও ক্যারিয়ার, নারীবান্ধব ক্যাম্পাস এবং ওয়েলফেয়ার কার্যক্রম।
সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের ৩৩ দফা ইশতেহারগুলো হলো-আবাসন সংকট নিরসন ও উন্নয়ন; শাটলের সংখ্যা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়ন; নিরাপদ বাস সার্ভিস; সুলভমূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিতকরণ; সেশনজট নিরসন করা; কটেজ-মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সুবিধা; নিয়মিত চাকসু নির্বাচন; ফ্যাসিবাদের দোসরমুক্ত ক্যাম্পাস বিনির্মাণ; মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ধারণ; মাতৃত্বকালীন ছুটি ও নারীবান্ধব কমনরুম; যৌন হয়রানি ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধ; শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকরণ; গবেষণায় উৎসাহ ও বরাদ্দ বৃদ্ধি; শিক্ষার্থীবান্ধব লাইব্রেরি; মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ; সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নত চিকিৎসাসেবা; নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ; গ্রিন ক্যাম্পাস; নারীবান্ধব ক্যাম্পাস; হল ও ফ্যাকাল্টিভিত্তিক সমস্যা সমাধান; প্রেয়ার রুম উন্নয়ন; সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার বিকাশ; সব জাতিগোষ্ঠীর অধিকার; অটোমেশন পদ্ধতি চালুকরণ; উচ্চশিক্ষা ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট; প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও শিক্ষাবৃত্তি; টিএসসি ও সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ; শরীরচর্চার পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি; লিগ্যাল এইড সেল গঠন; অফিশিয়াল ইমেইলের সহজলভ্যতা; অ্যালামনাইদের সঙ্গে সমন্বয়; মেন্টাল হেলথ কাউন্সিল এবং অন-ক্যাম্পাস জব। উল্লেখ্য আগামী ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষিত চাকসু নির্বাচন। এই নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৬৩৪ জন শিক্ষার্থী।