চার কৃষককে ব্যবসায়ী সাজিয়ে ৩১ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাগুলো দায়ের করা হয়।
দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ জানান, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পারিবারিক মালিকানাধীন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে ভুয়া মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে হিসাব খুলে চার কৃষককে ব্যবসায়ী সাজিয়ে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলাগুলো করা হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা গেছে, চারটি মামলার মধ্যে দুটিতে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমিলা জামানকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি ও আসিফুজ্জামান চৌধুরী এবং ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বশির আহমেদকে চার মামলাতেই আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া তার বোন রোকসানা জামান চৌধুরীকে দুটি মামলায় আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ব্যাংকের ১৩ কর্মকর্তাকে।
দুদকের এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নুরুল বশর নামে এক কৃষককে ‘বশর ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের আমদানিকারক দেখিয়ে ৮ কোটি টাকা ঋণ উত্তোলন ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলার আসামি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী , তার স্ত্রী, ভাই ও বোনসহ ১৭ জন।
আরেক মামলায় অভিযোগ আনা হয়, ইউনূস নামের অপর এক কৃষককে ব্যবসায়ী সাজিয়ে ‘ইউনাইটেড ট্রেডিং’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে স্বাক্ষরবিহীন ও ভুয়া মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে একটি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। ওই হিসাব থেকে ৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে। এ মামলায় ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বশির আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
আরেকটি মামলায় ফরিদুল আলম নামে এক কৃষককে ‘ইউনিক এন্টারপ্রাইজ’ নামের প্রতিষ্ঠানের মালিক দেখিয়ে ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলায় সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী ও ভাইদেরসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। আরেকটি মামলায় আইয়ুব নামে অপর এক কৃষককে ‘মোহাম্মদীয়া এন্টারপ্রাইজ’ নামে প্রতিষ্ঠানের মালিক দেখিয়ে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন ও আত্মসাতের অভিযোগে আনিসুজ্জামান, রোকসানা জামান, আসিফুজ্জামানসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি, যুক্তরাষ্ট্রে ১০টি বাড়ি থাকার অভিযোগে তদন্ত চলছে। এ ছাড়া থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভারত, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ায়ও তার নামে বেনামে বিপুল সম্পদের খোঁজ করছে দুদকসহ একাধিক সংস্থা।