বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেল লাইন নির্মাণ কাজের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে শনিবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এমপি। রেলমন্ত্রী বগুড়ায় এসে বগুড়ার রেলষ্টেশন, বিভিন্ন রেলগেট ও বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথের ষ্টেশনের স্থান পরিদর্শন করেন।
এসময় তিনি বলেন, চলতি বছরেই বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হবে। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের কিছু জটিলতা ছিল। এছাড়াও প্রকল্প এলাকার সুবিধা ও অসুবিধা দেখতে আমি এখানে এসেছি। বর্তমানে প্রকল্প নিয়ে আর কোন জটিলতা নেই। ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় এই প্রকল্পটিতে অর্থ ব্যয় করা হবে। পাশাপাশি পুরো প্রকল্পে সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকার মতো খরচ হবে। এছাড়াও প্রকল্প পরামর্শকেরা ইতিমধ্যে কোথায় কোথায় ব্রিজ, ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস নির্মাণ হবে তা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। দ্রুত রেলপথ যাচাইয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এসময় রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো: হুমায়ুন কবীর, রেলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বগুড়া জেলা প্রশাসক মো: জিয়াউল হক, পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, বগুড়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিক, বগুড়া সদর ইউএনও সমর কুমার পাল, বগুড়া সদর থানার ওসি সেলিম রেজা, জেলা আওয়মীলীগের দপ্তর সম্পাদক আল রাজি জুয়েল, শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন সান্নু, শাজাহানপুর ইউএনও আসিফ আহম্মেদসহ আ’লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এমপি সাংবাদিকদের জানান, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। বর্তমানে উত্তরের যাত্রীদের ঈশ্বরদী ঘুরে, নাটোর হয়ে ১২০ কিলোমিটার এবং বগুড়ার মানুষদের ১১২ কি: মি: ঘুরতে হয় ঢাকার পথে যেতে। এ পথ নির্মাণ হলে তা সরাসরি ৭০ কিলোমিটার হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পর ঘোষণা দিয়েছিলেন যা এখন বাস্তবায়নের পথে। ইতিমধ্যেই কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে, কোন দিক থেকে রেল লাইন যাবে তা ঠিক করা হচ্ছে। আলাপ আলোচনা করে ঢাকায় গিয়ে চূড়ান্ত সিদ্বান্ত নেব। তিনি আরো বলেন, চলতি বছরেই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণ কাজ শুরু করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবো।
জানা গেছে, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ বাস্তবায়নে ৭টি রেলওয়ে স্টেশন নির্ধারণ করা হয়েছে। বগুড়ার রানীর হাট, শাজাহানপুর, আড়িয়া বাজার, শেরপুর, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, চান্দাইকোনা, কৃষাণদিয়া। একই সঙ্গে একটি রেলওয়ে জংশন নির্মাণ করা হবে সিরাজগঞ্জে। বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উত্তরের বিভিন্ন জেলার সাথে প্রায় ৭২ কিলোমিটার পথ কমে আসবে। সময়ের সাথে আর্থিকভাবে লাভবান হবে উত্তরের মানুষগুলো।
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়তে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশে সুষম উন্নয়ন কাজ করছে সরকার। বগুড়া সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ সম্পন্ন হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নবদিগন্ত সৃষ্টি হবে। কৃষি পন্যসহ সহজেই যাতায়াত করা যাবে।
উল্লেখ্য ২০১১ সালের ৯ এপ্রিল সিরাজগঞ্জে এবং ২০১৫ সালে বগুড়ায় দলীয় এক জনসভায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ রেলপথ উপহার দেওয়ার ঘোষণা করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত/হিমেল