বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে দেশে বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে ও যুব সমাজকে ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ করতে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আজ শনিবার বিকালে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাহের বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করতে জামায়াতে ইসলামী এদেশে সুদমুক্ত ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। দেশসেরা ইসলামী ব্যাংক অল্প দিনেই এশিয়ার সেরা ব্যাংক হিসেবে মর্যাদা লাভ করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই ইসলামী ব্যাংককে ধ্বংস করে দিয়েছে। পরবর্তীতে এক-এক করে দেশের সব ব্যাংকের টাকা আওয়ামী লীগ লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে সচল করতে জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুত রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জন্য ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে একটি চমৎকার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’
পরিবর্তিত পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এসময় তিনি ব্যবসায়ীদের দেশপ্রেম বুকে লালন করে ব্যবসা করার অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আবদুস সালাম, এফবিসিসিআই’র পরিচালক এনায়েত উল্ল্যাহ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ব্যবসা বিভাগের সেক্রেটারী ছগির বিন সাইদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা মেজবাহ উদ্দিন সাইদ, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নেতা আইয়ুব আলী ফরাজী, হামিদুর রহমান সোহাগ, রাশেদুল হাসান রানা, রিহ্যাবের কার্যনির্বাহী সদস্য ড. হারুনুর রশিদ, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নেতা লায়ন সবুজ সর্দার প্রমুখ।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইন, ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল-আমিন, মহানগরী দক্ষিণের সহকারী অফিস সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুমন, সহকারি প্রচার ও মিডিয়ার সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন, সহকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহীন আহমদ খান, ইসলামিয়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাসনাত মো. মুর্তজাসহ বিভিন্নস্তরের ব্যবসায়ী।
সভাপতির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, গতিশীল ও শক্তিবান একটি ব্যবসা গড়ে তুলতে প্রয়োজন দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্ব। আমাদের দেশের সকল অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোতে দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিরা বসে আছেন। দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্ব ছাড়া কোনোভাবেই গতিশীল অর্থব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। গত ১৬ বছর দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ছিলো না। ভ্যাট ও ট্যাক্সের নামে ঘুষ, কমিশন বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়েছে। এসব বন্ধ করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে সকল অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনে প্রকৃত ব্যবসায়ী ও সৎ ব্যক্তিরাই নেতৃত্ব দেবে। আর কোনো সালমান এফ রহমান, এস আলম সৃষ্টি হতে দেওয়া হবে না।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ৫ আগস্টের আগে বাংলাদেশে ব্যবসা ছিল কারুনের গোষ্ঠীর দখলে। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা ওসমান (রা.) মতো সৎ ও আদর্শবান ব্যবসায়ী হবে। সুদমুক্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ধারক ও বাহক হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। হাসিনা এবং তার চাটুকারেরা দেশের সম্পদ লুট করে অর্থনীতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। এই অর্থনীতি ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করতে হলে ব্যবসায়ীদের অগ্রণী ভূমিকা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে বিশ্বের রোলমডেল।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ