বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ১৭ বছর ভারতকে শুধু দিয়েই গেছে। ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাশে দাঁড়িয়েছিল, সেজন্য কৃতজ্ঞ। তবে বিগত বহু বছর তারা কড়ায়গণ্ডায় প্রতিদান আদায় করেছে।’
বুধবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে ভারত সরকার ও মিডিয়ার অপপ্রচার এবং ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশ’-এর আয়োজন করা হয়।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার টুইটে যে মনোভাব প্রকাশ করেছেন, সেটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যে ষড়যন্ত্র রেসকোর্সে হয়েছিল সেটিই...। গত ১৭ বছরে ভারতকে বাংলাদেশ শুধু দিয়েই গেছে। আজও ফারাক্কার পানির সমস্যা নিরসন হয়নি, সীমান্তে মানুষ মারা হচ্ছে। ভারত বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশে অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যার সৃষ্টি করে। তারা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়...।’
তিনি বলেন, ‘বলা হয়েছে— বাংলাদেশ দিয়ে ভারত ট্রানজিট নিলে বাংলাদেশ নাকি সিঙ্গাপুর হবে। অথচ আখাউড়া দিয়ে ভারতের এত ট্রাক গেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি শুধু কমছেই। বিগত বছরগুলোতে আমাদের শুধু ভুল বোঝানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের বিষয়ে দেশপ্রেমিক সব মানুষের বক্তব্য একই। ষড়যন্ত্র অনেক আগেই শুরু হয়েছে, তবে কারো শেষ রক্ষা হয়নি। প্রতিটি কাজের হিসাব কিন্তু আগামী প্রজন্মের কাছে দিতে হবে। কেউ হয়ত নেদারল্যান্ডস গেছেন, কলকাতা গেছেন। কেউ চট করে ঢোকার চেষ্টা করছেন। সৎ সাহস থাকলে ঢোকেন, বিচারের মুখোমুখি হন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার বহু বছর পর হয়েছে। সুতরাং আগামীতেও সেই রকম হবে না, সেটি ভাবার কিছু নেই। তারা (আওয়ামী লীগ) বাড়িঘর দখল ও গায়েবি মামলা দিয়ে নির্যাতন করেছে। আল্লাহ তার বান্দাকে অবকাশ দেন যদি কেউ তার ভুল বুঝতে পারে। কিন্তু তা না হলে কি পরিণতি হয় সেটির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এত পরিমাণ গুম, খুন ও লুট করেও রক্ষা হয়নি। নিজেকে বাঁচানোর ভয়ে আপনি (সালমান এফ রহমান) নিজের দাড়ি কামিয়েছেন। অতএব অহংকার পতনের মূল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্র মেরামত করার লক্ষ্যে ৩১ দফা নিয়ে কাজ করছি। অতি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। এরশাদের পতনের সময় কতদিন পর নির্বাচন হয়েছিল সেটি সবারই মনে থাকার কথা। নির্বাচন করতে কতদিন লাগে সেটি দেশের মানুষ জানে। যেহেতু পতিত স্বৈরাচার সরকার সাড়ে ১৫ বছরে দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, সেজন্যই সব রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করছে। কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে।’
প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার।
আরও বক্তব্য দেন জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মুহাম্মদ ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এমএ মান্নান ও প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের (পিএনপি) ফিরোজ মো. লিটন।
সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজউদ্দিন টিটু।
বিডি প্রতিদিন/কেএ