ক্ষুদ্র এক প্রাণী পিঁপড়া। এই পিঁপড়াই মানুষের আগেই কৃষিকাজ শুরু করে। মানুষের প্রথম কৃষিকাজের প্রমাণ পাওয়া যায় প্রায় ২৩ হাজার বছর আগে। কিন্তু সম্প্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন তারা প্রায় ৩০ লাখ বছর আগেই কৃষিকাজের প্রমাণ পেয়েছেন। তবে তা মানুষের নয়, পিঁপড়ার। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ফক্স নিউজ।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় তিন মিলিয়ন বছর আগে পিঁপড়ার এ কৃষিকাজ দেখে বহু গবেষকই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। মানুষের মস্তিষ্ক সে সময় বিকশিত হয়নি। কিন্তু পিঁপড়ার কৃষিকাজ দেখেই বলা যাচ্ছে, তারা যথেষ্ট সংঘবদ্ধ ও কিছুটা হলেও বুদ্ধিমান ছিল।
যে পিঁপড়াদের এ কৃষিকাজের সন্ধান পাওয়া গেছে তাদের নাম ফিজি অ্যান্ট। এ পিঁপড়ারা ফল ধরে এমন গাছের বীজ রোপন করত, তাদের সার দিত এবং রক্ষা করত। এরপর ফল সংগ্রহ করত এবং আবার বীজ রোপন করত। এ বিষয়ে গবেষকরা সম্প্রতি তাদের পর্যবেক্ষণ ‘ন্যাচার প্ল্যান্টস’-এ প্রকাশ করেছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ অনুযায়ী মানুষের কৃষিকাজের সবচেয়ে পুরনো নিদর্শন পাওয়া যায় ২৩ হাজার বছর আগে। প্রথম কৃষিকাজের এ প্রমাণ মেলে বর্তমান তুরস্ক ও ইরানে। মানুষের প্রথম কৃষিভিত্তিক সভ্যতা সে অঞ্চলেই গড়ে উঠেছিল বলে ধারণা করা হয়। সে বিষয়টি গবেষকদের আন্তর্জাতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়। তেল আবিব ইউনিভার্সিটি ও হারভার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এ বিষয়টি জানিয়েছেন, যা প্লস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
তবে নিজেদের এ কৃষিকাজ প্রমাণ করে পিঁপড়ারা এ দিক দিয়ে মানুষের থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে। এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন জার্মানির মিউনিখ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। গবেষকদের একজন বলেন, ‘পিঁপড়ারা আমাদের ধারণার চেয়েও স্মার্ট।’
কেমন ছিল পিঁপড়াদের সেই প্রথম কৃষিকাজ? এ প্রসঙ্গে গবেষকরা লিখেছেন, তারা দেখেছেন কয়েক ডজন স্কুয়ামিলেরিয়া (Squamellaria) গাছ। এগুলো পিঁপড়ার বাসার সঙ্গে সংযুক্ত, যার আকার বৃত্তাকার। বেশ কয়েকটি গাছকে এভাবে সাজিয়ে ছোট বাগানের মতো বানানো হয়েছে। আর প্রত্যেকটি গাছের সঙ্গেই রয়েছে পিঁপড়ার বাসার সম্পর্ক। গাছগুলোর সার ও পরিচর্যা পিঁপড়াই করত। আর পিঁপড়ার পরিচর্যা ছাড়া গাছগুলো বড় হতে পারত না। এ বিষয়ে গবেষকদের বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ‘নিউসার : ৩এম ইয়ার্স বিফোর হিউম্যানস, অ্যান্টস ওয়্যার ফারমার্স’-এ।
বিডি প্রতিদিন/৩০ নভেম্বর ২০১৬/হিমেল