শহরটির নাম উৎকিয়াভিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উত্তরের আলাস্কা রাজ্যের অন্যতম শহর এটি। এই শহরে এক নাগাড়ে ৬৫ দিন ধরে দেখা মিলবে না সূর্যের।
অর্থাৎ টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে সূর্য ওঠে না শহরটিতে। প্রতিবছর শীতকালের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এমন ঘটনার সাক্ষী হন উৎকিয়াভিকের বাসিন্দারা।
সৌরজগতের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নভেম্বরে শেষদিকে সেখানে শেষ সূর্যাস্ত হয়। এর ঠিক ৬৫ দিন পর ফের সূর্যোদয় হয় উৎকিয়াভিকে।
এক সময় ‘ব্যারো’ নামে পরিচিত ছিল এই শীতলতম স্থানটি। মাত্র ৫ হাজার লোকের বসবাস সেখানে। নভেম্বরের শেষ দিক, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারির শুরুর দিক মিলে দুই মাস সূর্যের দেখা মেলে না শহরটিতে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে জানিয়েছে, গত সোমবার শহরটিতে ৩০ মিনিটের জন্য সূর্যের দেখা মিলেছিল। এরপর সেখানে সূর্য অস্ত যায়। ওই সূর্যাস্তের পর সেখানে ‘পোলার নাইট’ শুরু হয়েছে। সেখানে ২০২৫ সালের জানুয়ারির আগ পর্যন্ত আর সূর্য ফিরবে না।
তাহলে কি এই দুমাসেরও বেশি সময় অন্ধকারে ডুবে থাকবে শহরটা? না, তেমনটা হবে না। এই সময়কালে প্রতিদিনই ভোর হবে নিয়ম করে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে নয়, আলো থাকবে কয়েক ঘণ্টা। তারপর তা কমে গিয়ে অন্ধকার নেমে আসবে।
প্রতি বছরই এমন হয়ে থাকে। এই সময়ে সেখানকার তাপমাত্রা থাকে মোটামুটিভাবে মাইনাস ৫ থেকে মাইনাস ১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। শীতের মাত্রা বৃদ্ধির দিকে যা মাইনাস ২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
এই শহরের বাসিন্দারা এমন পরিবেশের সঙ্গে বাস করতে অভ্যস্ত। তারা বিভিন্ন কৃত্রিম আলো ব্যবহার করে এবং অন্যান্য কাজ করে দিন কাটায়। সূর্যের আলো না থাকায় ভিটামিনের ডি’র ঘাটতি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেখানকার বাসিন্দাদের। ফলে এই সময়ের কথা ভেবে প্রচুর ভিটামিন ডি জমিয়ে রাখেন বাসিন্দারা। শীতের হাত থেকে বাঁচতেও নানা সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তারা।
শুধু উৎকিয়াগভিক শহরই নয়, আলাস্কার কাকটোভিক, পয়েন্ট হোপ ও আনাকটুভুক পাসের বাসিন্দারাও এক থেকে দুই মাস সূর্যের দেখা পান না।
পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় একটু ঝুঁকে থাকে। এই ঝুঁকে থাকার কারণেই বছরের বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে সূর্যের আলো পড়ার পরিমাণ ভিন্ন হয়। আর মেরু অঞ্চলগুলো পৃথিবীর অন্যান্য অংশের তুলনায় সূর্য থেকে অনেক দূরে থাকে। ফলে সূর্যের আলো সরাসরি এই অঞ্চলে পৌঁছাতে পারে না। সূত্র: ইউএসএ টুডে
বিডি প্রতিদিন/একেএ