বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে দল থেকে বহিষ্কৃত প্রাক্তন ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্যপদ বাতিলে পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) চিঠি দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
রবিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ চিঠি ইসিতে পাঠানো হয়। একই দিন লতিফ সিদ্দিকীও একটি চিঠি দেন ইসিতে, যাতে তিনি তার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে অনুরোধ করেন।
গত বছর নিউ ইয়র্কে এক সভায় হজ নিয়ে এক মন্তব্যের জের ধরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন লতিফ সিদ্দিকী। পরবর্তীতে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় সদস্যপদ হারান তিনি। দেশে ফেরার পর ধর্ম বিষয়ে অবমাননার মামলায় কয়েক মাস কারাবাসের পর সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেকে এ সদস্য।
আগয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর সংবিধান অনুযায়ী লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্যপদ বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের মতামত চেয়েছিল ইসি।
মতামত জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া চিঠি দলের উপ দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস ও সহ সম্পাদক এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলামের কাছে দিয়ে আসেন।
কমিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে মৃণাল কান্তি দাস সাংবাদিকদের বলেন, লতিফ সিদ্দিকী আর আওয়ামী লীগের কেউ নন। তিনি আইনগতভাবেই ওই অধিকার হারিয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদকের চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ওই চিঠিতে লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ বাতিলের অনুরোধ করা হয়েছে।
দলের প্যাডে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়, 'দলীয় গঠনতন্ত্র মেনে সর্বসম্মতিক্রমে দলের সব সদস্য পদ ও প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে লতিফ সিদ্দিকীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেউ নন। সংবিধানের ৬৬ (৪) অনুচ্ছেদ, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ১২ (১) অনুচ্ছেদ, সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি ১৭৮ ধারা অনুযায়ী টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য লতিফ সিদ্দিকীর সদস্য পদ বাতিলের জন্য অনুরোধ করছি।'
এর আগে আগে দুপুরে সিইসিকে লেখা লতিফ সিদ্দিকীর একটি চিঠি ইসি সচিবালয়ে দিয়ে আসেন তার ব্যক্তিগত সহকারী। চিঠিতে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার কষ্টকল্পিত বানোয়াট ও ভিত্তিহীন যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা আলোচনার স্বার্থে যদি ধরেও নেওয়া হয় যে আমি ওই বক্তব্য দিয়েছি, তাহলেও আওয়ামী লীগ থেকে সদস্যপদ বাতিলের এখতিয়ার কেন্দ্রীয় সংসদের নেই।'
তিনি বলেন, 'জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি বক্তব্য দিয়েছি। আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে বক্তব্য দিয়েছি বলে বিবেচনার সুযোগ নেই। আমাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ভুল ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে।'
এদিকে দুজনের বক্তব্য পাওয়ার পর ইসি এখন আইন মেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে বলে ইসির আইন শাখার কর্মকর্তারা জানান।
বিডি-প্রতিদিন/০২ আগস্ট ২০১৫/ এস আহমেদ