দেশের সর্ব দক্ষিণে তথা পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় উচ্চ গতি সম্পন্ন দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্টেশনের উদ্ধোধন করা হয়েছে। রবিবার সকাল পৌঁনে ১১টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্টেশনটির উদ্ধোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সাথে দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালীর প্রশাসনিক ভবন, লোন্দা সেতু এবং কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের বর্ধিত ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় সেখানে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ডাক টেলিযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
এদিকে কুয়াকাটা প্রান্তে পটুয়াখালী-৪ আসনের এমপি মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, ডাক ও টেলি যোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিভাগীয় কমিশনার মো. শহীদুজ্জামান, বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ড. মো. মাছুমুর রহমান, বিএসসিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন জানান, কক্সবাজারে একটি সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন আছে। সেখান থেকে প্রতি সেকেন্ডে ২৫০ গিগাবাইট (জেবিপিএস) গতির ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এই স্টেশন থেকে সবার চাহিদা মেটানো যাচ্ছেনা। এখন কুয়াকাটার এই ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে পর্যায়ক্রমে দেড় হাজার জিবিপিএস গতির ব্যান্ডউইথ সরবরাহের সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন চালু হওয়ায় দেশীয় টেলিকম কোম্পানীগুলোকে বিদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ কিনতে হবে না। বরং অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত ব্যান্ডউইথ রপ্তানীর মাধ্যমে বাংলাদেশ বড় অঙ্কের অর্থ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের সুযোগ পাবে। দুটি ল্যান্ডিং স্টেশন হওয়ায় একটি স্টেশনে সমস্যা হলে আরেকটি দিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়া যাবে। তাছাড়া পটুয়াখালী, বরিশাল, যশোর, খুলনা, ফরিদপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ কম দামে ব্যান্ডউইথ পাবে। এর গুণগত মান ভালো হবে এবং ইন্টারনেটের গতিও বাড়বে।
জাপানের এনইসি এবং ফ্রান্সের অ্যালকাটেল লুসেন্ট যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ এই সাবমেরিন ক্যাবল স্টেশন নির্মাণ করেছে। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে একটি শাখার মাধ্যমে এই ইন্টারনেট মূল ক্যাবলে বাংলাদেশ যুক্ত হবে।
প্রায় ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার ১৬৬ কোটি টাকা ও বিএসসিসিএল ১৪২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এই প্রকল্পের বাকী ৩৫২ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা দিয়েছে ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি)।
কুয়াকাটা থেকে ঢাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে ব্যান্ডউইথ পৌঁছানোর অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকহোল তৈরির কাজ করেছে ন্যাশন ওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের (এনটিটিএন) স্থানীয় অপারেটর বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল)।
বিডি প্রতিদিন/১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭/হিমেল